রোজা রেখে রক্ত দিলে কী রোজা ভেঙে যাবে?

রক্ত দান করা নিঃসন্দেহে ভালো কাজ। কারণ আপনার দেওয়া রক্তে বেঁচে যেতে পারে কারও প্রাণ। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে রোজা রেখে রক্তদান করার ক্ষেত্রে কঠোরভাবে নিষেধ নেই। নিতান্ত প্রয়োজনে দেওয়ার ব্যাপারে অনুমতি রয়েছে। তাই রোজা রেখেও আপনি চাইলে রক্তদান করতে পারবেন।

কেউ যদি রোজা অবস্থায় প্রয়োজনে রক্ত দিতে চায়, তাহলে তার রোজা ভাঙবে না। তবে যদি শারীরিকভাবে এমন দুর্বল হয় যে, রক্ত দিলে সে রোজা রাখার শক্তি হারিয়ে ফেলবে, তাহলে তার জন্য রক্ত দেওয়া মাকরুহ। প্রয়োজনে রক্তদান একজন রোগীর সেবার অন্তর্ভুক্ত। কারণ পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি কোনো মানুষের জীবন রক্ষা করল, সে যেন পুরো মানবজাতিকে রক্ষা করল। (সূরা মায়েদা : ৩২)।

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা রেখে সিঙ্গা লাগিছেন। সিঙ্গার মাধ্যমে শরীরের বিষাক্ত রক্ত বের করা হয়। তাই রোজা রেখে নিজের টেস্ট/পরীক্ষার জন্য কিংবা কোনও রোগীকে দেওয়ার জন্য রক্ত দিলে, রোজার ক্ষতি হবে না। তবে রক্ত দিয়ে দুর্বল হলে গেলে বা রোজা ভেঙে ফেলার আশঙ্কা থাকলে সেই অবস্থায় রক্ত দেওয়া মাকরূহ হবে।(বোখারি শরিফ, হাদিস নং-১৯৩৮, মুসলিম শরিফ, হাদিস নং-১১০৬,আবু দাউদ শরিফ, হাদিস নং-২৩৭২)

হজরত আকরামা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) হজের জন্য ইহরাম বাঁধা অবস্থায় শরীর থেকে শিঙ্গার মাধ্যমে রক্ত বের করেছেন এবং রোজা অবস্থায়ও শরীর থেকে শিঙ্গার মাধ্যমে রক্ত বের করেছেন।

অন্য হাদিসে এসেছে, হজরত আনাস বিন মালেককে (রা.) জিজ্ঞেস করা হলো, রোজাদারের জন্য শরীর থেকে শিঙ্গা লাগিয়ে রক্ত বের করাকে আপনি কি অপছন্দ করেন? জবাবে তিনি বলেন, না, আমি অপছন্দ করি না। তবে দুর্বল হয়ে পড়ার ভয় থাকলে ভিন্ন কথা। (সহিহ বুখারি: ১/২৬০; আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৪৩৫)।

রক্তদান একটি মহৎ কাজ। রমজানে যেকোনো দান আল্লাহকে খুশি করার জন্যই বান্দা করে থাকেন। আর রক্তদান একটি মহতী দান। কাজেই রোজায় রক্তদানে সবাইকে অনুপ্রাণিত করা উচিৎ।

এমএফ

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।