রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে ড. ইউনূসের তিন প্রস্তাব

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের উচ্চ পর্যায়ের সভায় বক্তব্য দেন। মিয়ানমারের সামরিক জান্তার অত্যাচারের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগণের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন নিয়ে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিয়ে প্রথম দিনেই রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা করেন তিনি। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় দুপুর ৩টায় অনুষ্ঠিত সভাটির সহ-আয়োজক ছিল ইন্দোনেশিয়া, গাম্বিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

কী-নোট স্পিকার হিসেবে ড. ইউনূস তার বক্তৃতায় তিনটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিবকে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় দ্রুত কনফারেন্স আয়োজন করতে হবে, যা সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সৃজনশীল ও কার্যকরী পন্থা নির্ধারণ করবে। দ্বিতীয়ত জাতিসংঘ ও বাংলাদেশের ‘জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান’কে আরও বেগবান করতে হবে এবং শেষদিকে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে গণহত্যার মতো অপরাধের বিচার ও জবাবদিহিতায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন চাইতে হবে।

এসময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে স্মরণ করিয়ে দেন যে, বাংলাদেশ প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে এবং প্রতিবছর ৩২ হাজার নতুন শিশু জন্ম নিচ্ছে। সম্প্রতি ২০ হাজার নতুন শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত চাপ তৈরি করছে, যা নিরাপত্তা ঝুঁকিরও জন্ম দিচ্ছে।

অধ্যাপক ড. ইউনূসে আরও বলেন, জাতিসংঘের বিভিন্ন মহল মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে, কিন্তু সংকটের মূল সমস্যার সমাধান না হওয়ায় তা কার্যকর হয়নি। তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তা রক্ষায় অংশীজনদের সাথে কাজ করার বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং রাজনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে সংকটের উত্তরণের বার্তা দেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।