লাল-সবুজে সজ্জিত লংগদুর ‘বাংলাদেশ সেতু’

পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে উন্নয়নের ছোয়ায় বদলে যাচ্ছে পার্বত্যাঞ্চল। এরই অংশবিশেষ লংগদুর বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের সড়ক, সেতু ও কালভার্ট। রং তুলির ছবিতে দেশের পতাকার সঙ্গে মিল রেখে নানান সেতু-কালভার্ট দৃশ্যকল্পে দেখলেও তা বাস্তবে রূপ নিয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি রাঙামাটির লংগদুতে। সেতুটি সেজেছে লাল সবুজের পতাকার রঙে। দেখলে মনে হবে, এ যেন একখণ্ড লাল-সবুজের বাংলাদেশ।

পার্বত্য জেলা রাঙামাটির লংগদু উপজেলার মাইনীমূখ ইউনিয়নের সোনাই এলাকায় এ দৃশ্য দেখা যায়। সেতুর কাঠামোয় লাল-সবুজের রঙে সজ্জিত করা হয়েছে। প্রখর রোদে লাল-সবুজের আলোকরশ্মি প্রতিফলিত হয় নদীর পানিতেও। পুরো স্থানটি সেজে ওঠে লাল-সবুজের আবহে।

জানা গেছে, রাঙামাটি জেলা পরিষদের অর্থায়নে নির্মিত সেতুটি স্থানীয়দের চাহিদানুযায়ী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী, এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার বিরল বড়ুয়া, ইঞ্জিনিয়ার এরশাদ, লংগদু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল দাশ বাবু ও ঠিকাদার মো. কামালের সমন্বয়ে সেতুটিতে লাল-সবুজের রঙে সজ্জিত করা হয়েছে।

স্থানীয় শিক্ষানুরাগী, তরুণ সমাজ সেবক এবিএস মামুন বলেন, সব সময়ই দেখি সেতুর রঙের সাথে বিভিন্ন দেশের পতাকার রঙে মিলে যাওয়া সেতুটিকে ভিন্ন দেশের নামের সাথে মিল করে ডাকা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের পতাকার সাথে সেতুর রঙের মিলটা খুব কমই হয়। তাই নিজ উদ্যোগে স্থানীয়দের সাথে পরামর্শ করে একবার ফোন করে ঠিকাদারকে আমার আগ্রহের কথা জানাতেই আনন্দের সাথে প্রস্তাবটি গ্রহণ করেন এবং দেশাত্মবোধক আবেগ ও ইচ্ছার প্রশংসা করেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের গ্রামের এই সেতুটিকে বাংলাদেশের পতাকার রঙে সাজানো হয়েছে। ব্রাজিল কিংবা আর্জেন্টিনা ব্রিজের নামে আদিখ্যেতা নয়, এটা হবে বাংলাদেশ সেতু।

দেশপ্রেমী সচেতন নাগরিকরা জানান, লাল-সবুজের রঙে জ্বলে উঠেছে সেতুটি। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছি ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালোরাত্রি। স্মরণ করেছি লাখ লাখ শহীদ ও মা-বোনদের, যাঁরা হানাদার বাহিনীর কাছে দীর্ঘ নয় মাস অত্যাচারিত ও নির্যাতিত হয়েছেন। তাঁদের মহান আত্মত্যাগের জন্য আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ। স্মরণ করেছি আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবসকে। দেশের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও বাংলাদেশকে তুলে ধরার একটি চমৎকার সুযোগ এই উদ্যোগ।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ উদ্যোগের মাধ্যমে সেতুটির মূল স্থাপনা সজ্জিত করা হয়েছে বাংলাদেশের পতাকার রঙে। লাল সবুজের আলোকছায়ায় সবাই মিলে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হয়েছে আমাদের সূর্য সন্তানদের। এই উদ্যোগ সরাসরি স্থানীয় সচেতন নাগরিক ও দেশপ্রেমিকদের।

লংগদু উপজেলায় এই প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদের সহায়তায় ও স্থানীয়দের সুচিন্ত ধারায় এই ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। তবে এ উদ্যোগের মূল কনসেপ্ট ও নেতৃত্ব দিয়েছেন তরুণ প্রজন্মের দিকনির্দেশক, উদ্যোক্তা ও সমাজ সেবক এবিএস মামুন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।