সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ১২ দফা দাবি নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সোহরাওয়ার্দী হলে তালা দিয়েছে শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ বিজয়ের একাংশের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (২৮ আগস্ট) তারা হলের প্রশাসনিক কক্ষে তালা দিয়ে হলের সামনে অবস্থান নেন। এসময় দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নানা স্লোগান দিতে দেখা যায় আন্দোলনকারীদের।
আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো হলো-
১. হলের অনেক রুমে খাট, টেবিল, চেয়ার ও আলমারির সংকটের দ্রুত নিরসন করতে হবে।
২. দীর্ঘদিন ধরে চলা হলের ভেতরকার রাস্তার সংস্কার কর্মকাণ্ডের দ্রুত সমাপ্তি চাই।
৩. ডাইনিং এবং ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের খুবই বাজে অবস্থা। দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে এর মান বৃদ্ধি করতে হবে।
৪. হলে পর্যাপ্ত সুপীয় পানির সংকট রয়েছে। দ্রুত তা নিরসন করতে হবে।
৫. হলের ওয়াফাই ঠিকমতো চলে না। নিরবিচ্ছিন্ন ওয়াইফাই সংযোগের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. হলের ওয়াশরুমের সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে হবে।
৭. সোহরাওয়ার্দী হলের মাঠের সংস্কার এবং দ্রুত খেলাধুলার সরঞ্জামের অপ্রতুলতা নিরসন করতে হবে।
৮. শিক্ষার্থীদের চলাচলের নিরাপত্তার জন্য হলের সামনের রাস্তায় স্পীড ব্রেকার দিতে হবে।
৯. রিডিং রুমে পর্যাপ্ত বই, চেয়ার, টেবিল ও নিরবচ্ছিন্ন আলো ও ফ্যানের ব্যাবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
১০. টিভির রুমের বেঞ্চ ও গেস্ট রুমের সোফার সংকট নিরসন করতে হবে।
১১. হলের পানির হাউজ ব্যবহারের উপযোগী করতে হবে।
১২. পুরাতন এক্সটেনশন ভবনে শিক্ষার্থীদের জীবনের হুমকি রয়েছে। তাই নতুন এক্সটেনশন নির্মাণ করতে হবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মুননতাসীর সিয়াম বলেন, আমাদের প্রত্যেকটি দাবি যোক্তিক। হলের সামনের মোড়টা ৩ রাস্তার মোড় কিন্তু এখানে কোনো স্পিড ব্রেকার নাই। এতে করে শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি থাকে সবসময়। হল কর্তৃপক্ষ বারবার আমাদের মৌলিক দাবিগুলো পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। এছাড়া খাবার অত্যন্ত নিম্নমানের। ওয়াশরুম অপরিষ্কার এখানে যাওয়া যায় না। তাই আমাদের উল্লিখিত দাবিগুলো পূরণ করা এখন সময়ের দাবি।
শাখা ছাত্রলীগের উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক আফ্রিদি রহমান নিটো বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা আমাদের সমস্যার কথা বলে আসছি। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য হলেও শিক্ষার্থীদের কোনো কিছুই পূরণ করা হচ্ছে না। ডাইনিং, ক্যাফেটেরিয়ার অবস্থা খুবই খারাপ ওখানে খাওয়াই যায় না। এছাড়া আমাদের রিডিং রুম, কমন রুম কোথাও আসবাব পত্র নেই। একটু বৃষ্টিতেই হলের সামনে পানি জমে থাকে। এতে করে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আমরাও বিপদে পড়ি। এজন্য প্রশাসনকে আমাদের দাবিগুলো পূরণের নিশ্চয়তা দিতে হবে।
অপর ছাত্রলীগকর্মী আল সাকিব বলেন, হলের শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য আজকের আন্দোলন। কারণ, হল প্রশাসন আমাদের মৌলিক অধিকার গুলো পূরণ করতে পারছে না। আমাদের বসবাসের সমস্যা, খাবারে সমস্যা, রিডিং রুমের সমস্যা। প্রশাসনের মাধ্যমে আমাদের এসকল সমস্যার দ্রুত যেন সমাধান হয় এটাই আমরা চাই।
এসব বিষয়ে চবি প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, আমরা সোহরাওয়ার্দী হলের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১২টি দাবি পেয়েছি। তার মধ্যে সুপেয় পানির সমস্যা, রাস্তা সংস্কার, ডাইনিং এ খাবার সমস্যা, ওয়াশরুমের সমস্যা, রিডিং রুম, চেয়ার টেবিল, ওয়াইফাই এর সমস্যার কথা তারা বলেছে। আমি তাদেরকে আশ্বস্ত করতে চাই যতদ্রুত সম্ভব প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই সমস্যা গুলোর সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে। আমি তাদেরকে লিখিতভাবে সমস্যাগুলো জানাতে বলেছি। কোথায় লিখে জানাতে হবে সেই দিকনির্দেশনাও আমি তাদের দিয়েছি। আশা করি সমস্যার সমাধান হবে ইনশাআল্লাহ।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।