শিশুর মেরুদণ্ডের যে চিকিৎসা বিদেশে হয়নি তা হলো চট্টগ্রাম এভারকেয়ারে

চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো ১২ বছর বয়সী শিশুর স্কোলিওসিস কারেকশন সার্জারি সম্পন্ন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম। সম্প্রতি হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট অ্যান্ড কো-অর্ডিনেটর ডা. মো: আনিসুল ইসলাম খান ও তার টিম সফলভাবে এই জটিল অপারেশন সম্পন্ন করেন।

অপারেশনের পরদিনই শিশুটি স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলায় সক্ষম হয়। অভিভাবকরা দেশের পাশাপাশি বিদেশেও চিকিৎসা করিয়েছিলেন এই শিশুর। কিন্তু সমস্যা দূর হয়নি। আর বন্দর নগরীতে কাঙ্খিত চিকিৎসা পেয়ে শিশুর স্বজনের মুখে ফুটলো আনন্দের হাসি।

শিশু তাসফিয়া আজম ফারিহা জন্মগতভাবে বাঁকা মেরুদন্ড জনিত সমস্যায় ভুগছিলো। গত ০৩ মার্চ সমস্যা নিয়ে ফারিহাকে এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এর নিউরোসার্জারি বিভাগে আনা হয়। সেসময় তার মেরুদন্ডের উপরিভাগ একদিকে বেশ খানিকটা বাঁকানো ছিল এবং স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলায় সমস্যা হচ্ছিল।

রোগীর স্বজনরা জানান, ৮ বছর বয়স থেকেই এই সমস্যা তীব্র হতে থাকে এবং বিদেশে নিয়ে এর চিকিৎসাও করানো হয়েছিল। এমতাবস্থায় ডা. মো: আনিসুল ইসলাম খান যাবতীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার পর বুঝতে পারেন পূর্ববর্তী সার্জারির পরও হাড় বাঁকা থেকে গিয়েছে এবং কিছু লোহার ভাঙ্গা টুকরা দৃশ্যমান আছে যা পূর্ববর্তী সার্জারিতে ব্যবহৃত হয়েছে, যে কন্ডিশনকে মেডিক্যালের ভাষায় স্কোলিওসিস বলা হয়। রোগীর পরিবারের সম্মতিক্রমে গত ২১ জুলাই ডা. আনিস স্কোলিওসিস কারেকশন সার্জারি করার সিদ্ধান্ত নেন।

এ প্রসঙ্গে এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এর নিউরোসার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট অ্যান্ড কো-অর্ডিনেটর ডা. মো: আনিসুল ইসলাম খান বলেন, “ছোট্ট ফারিহাকে যখন প্রথম এভারকেয়ারে আনা হয় তখন তার অবস্থা খুবই গুরুতর ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা পরামর্শ দ্বারা তাকে বেশিদিন স্বাভাবিক রাখা মুশকিল ছিল। তবে যেহেতু চট্টগ্রামে ইতোপূর্বে এই রোগের চিকিৎসা হয়নি, তাই পরিবার থেকে কিছুটা বিচলিত থাকলেও অবশেষে এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রামের বিশ্বমানের চিকিৎসা ব্যবস্থা, উন্নত সরঞ্জাম ও দক্ষ মেডিক্যাল টিম দেখে রোগীর পরিবার সার্জারির অনুমতি দেন এবং আমরা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো স্কোলিওসিস কারেকশন সার্জারির মাধ্যমে রোগীর বাঁকা মেরুদন্ড সোজা করা হয়। সার্জারির পরদিনই রোগী স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করে এবং গত ২৮ জুলাই রোগীকে ছাড়পত্র প্রদান করা হয়।”

তিনি আরও বলেন, “আমি অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত যে, চট্টগ্রামে এভারকেয়ার হসপিটাল-এর মতো একটি হাসপাতাল রয়েছে। একইসাথে দক্ষ ও অভিজ্ঞ একটি টিমের সাথে কাজ করতে পেরে আমি ভীষণ আনন্দিত এবং জটিল রোগের চিকিৎসায় এখন আর কোন রোগীর বিদেশ যাওয়ার প্রয়োজন নেই বলে আমি মনে করি।”

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।