‘সংবিধানের ৫ম সংশোধনীতে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড জায়েজ করা হয়’
চবিতে স্মারক বক্তৃতায় বিচারপতি ওবায়দুল হাসান
বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, সর্বমোট ১৭টি সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানকে যুগোপযোগী করার চেষ্টা চলেছে। তবে সব সংশোধন ভাল উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়নি। জেনারেল জিয়া এবং এরশাদ আমলে নিজেদের শাসনকে বৈধ করার জন্য সংশোধনী আনা হয়।
৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির হাতে পুরো রাষ্ট্রক্ষমতা প্রদান করা হয়৷ তখন বিচারপতি নিয়োগ থেকে শুরু করে সকল ক্ষমতা একক নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। সেটাকে বলা হয় বাকশাল শাসন। ৫ম সংশোধনী দিয়ে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড জায়েজ করা হয়। তাঁর হত্যাকারীদের যাতে বিচার না হয় সেই ব্যবস্থা করা হয়। আবার ৭ম সংশোধনী দিয়ে সামরিক সরকারের ক্ষমতা তৈরি করে দেয়া হয়। এই দুটি সংশোধনী বাংলাদেশের ইতিহাসে নেতিবাচক পথের উন্মোচন করে দেয়।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আইন বিভাগ ও একে খান ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশের সংবিধান : সংশোধন ও বিকাশ বিষয়ক চতুর্থ একে খান স্মারক আইন বক্তৃতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই সংবিধান তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়। তবে আমরা সংবিধান তৈরির প্রতিটি প্রক্রিয়া, প্রসিডিউর এবং আর্কাইভ যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে পারিনি। এতে যারা স্বাধীন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ছিল তাদের বিজয় হয়েছে।
স্বাধীনতার ঘোষক, গণভোটের আয়োজনের যৌক্তিকতা, ধর্মনিরপেক্ষতার মানে কী, এমনকি প্রধান চার মূলনীতি নিয়েও প্রশ্ন তৈরি করে তারা। তাই আইন সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এ সংবিধান সংরক্ষণে ভূমিকা রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশ সম্পর্কে জানতে হলে আগে আমাদের দেশের সংবিধান সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। সংবিধানের সংশোধনী নিয়ে আমার মতো সাধারণ মানুষের জানাশোনা কম। আমরা কিছু কিছু জানি, তবে গভীরভাবে জানিনা। আমাদের সকলেরই আইন ও সংবিধানের বিস্তৃত জ্ঞান রাখা উচিৎ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চবি রেজিস্ট্রার প্রফেসর এস.এম মনিরুল হাসান, আইন অনুষদের ডিন প্রফেসর এবিএম আবু নোমান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. সেলিনা আখতার, সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. সজীব কুমার ঘোষ এবং আইন বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. সাজেদা আক্তার সহ প্রমুখ।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।