সন্দ্বীপে ৩ সন্তানহারা মা-বাবার অশ্রুসিক্ত ঈদ

প্রতি ঈদে ভিডিও কলে বাবার সাথে কথা হতো কন্যাদের সাথে। কিন্তু একটি স্পীডবোট দুর্ঘটনায় সেই রীতিতে ছেদ পড়েছে। যে দুর্ঘটনা প্রবাসী পিতার সব স্বপ্নই শেষ করে দিল।

বলা হচ্ছে ২০ এপ্রিল গুপ্তছড়া ঘাটে স্পীডবোট দুর্ঘটনায় প্রবাসী আলাউদ্দীন ও মা স্বপ্না বেগমের ৩ টি সন্তান নিহতের কথা।

দুর্ঘটনায় প্রথম সন্তান আনিকাকে পানি থেকে তুলে এনে হাসপাতালে নিলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া তাৎক্ষণিক নদীর স্রোতে ভেসে যায় যমজ দুবোন আদিবা (৮) ও আলিফা। দুর্ঘটনায় দুই দিন পর সন্দ্বীপের বিছিন্ন ইউনিয়ন উড়িরচরে আদিবার মরদেহ পাওয়া গেলেও এখনো পাওয়া যায়নি আলিফার মরদেহ। উদ্ধারকারী দল মরদেহের সন্ধান না পেয়ে উদ্ধার অভিযান সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

তিন সন্তানের শোক এবং হারানোর কষ্টে প্রায়ই কাঁদতে কাঁদতে অচেতন হয়ে পরেন মা স্বপ্না বেগম। আজ ঈদের নামাজের পরে বাবা আলাউদ্দীন কন্যা সন্তানদের কবর জিয়ারত করতে যান স্বজনদের নিয়ে। কবরের পাশে যাওয়ার পূর্বে মা-বাবার কান্নার শব্দে মগধরা ৬নং ওয়ার্ডের বাতাস ভারী হয়ে উঠে।

২৪ বছর প্রবাস জীবন আলাউদ্দীনের। তিন কন্যার সাথে বিগত বছরগুলোতে কাটেনি একটিও ঈদ। এবারের ঈদে থাকার কথা ছিল আলাউদ্দীনের কিন্তু প্রবাস জীবনের কর্মঘন্টা বেজে উঠাই ওমান রওনা দেন গত ১৪ এপ্রিল দুর্ঘটনার ৬ দিন পূর্বে।

ফোনে এভাবে কান্না করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন প্রবাসী আলাউদ্দীন। আমার জীবনটা থমকে গেছে কার জন্য আয় রোজগার করব!

আজকে ঈদে নতুন কোন জামা-কাপড় পরিধান করেনি মা-বাবা উভয়ে। তারা কেঁদে কেঁদে বলছেন আমাদের তো ঈদ শেষ!

আবারও হয়তো প্রবাসে পাড়ি জমাবেন আলাউদ্দীন তবে সেটা এখনই নয়। স্ত্রী স্বপ্না বেগম শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তাই আরও কয়েক মাস পরে যাবার চিন্তা করব বললেন প্রবাসী আলাউদ্দীন।

সন্তান হারা শোককে শক্তিতে রুপান্তর করে তারা কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? তাদের অশ্রুসিক্ত দু’নয়নের অশ্রু ঝরা থামবে কবে জানে না কেউই!

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।