রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় এক স্কুলে দুই জোড়া যমজ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। চেহারার মিল থাকায় শিক্ষকদের কিছুটা বিড়ম্বনা হলেও তাদের নিয়ে খুনসুটিতে সময় কাটে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-সহপাঠীদের।
দেখতে হুবহু একই চেহারা। উচ্চতায় দু-একজনের অমিল থাকলেও অধিকাংশরই মিল বেশি।
এমনকি পছন্দ-অপছন্দের তফাতও খুবই কাছাকাছি। তাই বলে যে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয় না তা-নয়, হয় কিন্তু সেটা ক্ষণিকের জন্য। এদের কেউ হতে চায় শিক্ষক, কেউ পুলিশ অফিসার, কেউবা সেনাবাহিনীর অফিসার। তবে সকলেরই উদ্দেশ্য এক, দেশ সেবা ও জনসেবা করা।
এমন দুই জোড়া যমজ শিক্ষার্থীর দেখা মিলবে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার লংগদু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, বিদ্যালয়টিতে অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে দুই জোড়া যমজ ভাই-বোন। এর মধ্যে অষ্টম শ্রেণিতে হিতেষ চাকমা ও হিতেন চাকমা। নবম শ্রেণিতে পুষ্পিতা চাকমা ও কাকলী চাকমা জোড়া ভাই-বোন রয়েছে।
অষ্টম শ্রেণির হিতেষ-হিতেনের মধ্যে হিতেষ বড় হয়ে সেনাবাহিনীর অফিসার হয়ে দেশ সেবা করবে আর হিতেনের শখ-শিক্ষক হওয়ার। অন্যদিকে পুষ্পিতা-কাকলী তাদের দুজনই হতে চায় শিক্ষক।
চেহারায় মিল থাকায় শিক্ষক ও সহপাঠীরা বিভ্রান্ত হলেও মেধার দিক দিয়ে কোন অংশে কমতি নেই বলে জানালেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তাই পুরো ক্লাসে মিল-অমিলের হিসেব কষাকষির বিষয়টিও হাস্যরসে পরিণত করে সবাইকে। খেলাধুলা, পড়াশুনা করা নিজেদের ভালো লাগার পাশাপাশি মুগ্ধতা ছাড়ায় আশেপাশেও।
পুষ্পিতা ও কাকলী চাকমার বাবা উৎপল চাকমা জানান, ছোট থেকেই তাদের সব কিছু এক ও অভিন্ন। পছন্দ, খাবার, খেলাধুলা, পড়ালেখা এমন কি অসুস্থতার বিষয়টিও! তিনি আরও বলেন, যমজ দুই মেয়েকে চিনতে নিজেদেরই মাঝেমধ্যে সমস্যা হয়ে যায়। তবে দুই মেয়েই পড়াশোনা শেষে ভালো কিছু করবে বলে প্রত্যাশা করেন।
ওই বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক তৌহিদুল রেজা জানান, যমজ শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্লাস করার আনন্দটাও আলাদা। তবে তাদের শনাক্ত করতে কিছু বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। তারা সব সময় এক সঙ্গে বসে, তবে কোন কিছু নিয়ে বিবাদ হলে তারা আলাদা বসে। এতে আমরা বুঝতে পারি দুজনের মধ্যে কিছু একটা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজিব ত্রিপুরা বলেন, তারা যমজ হলেও মেধার দিক দিয়ে কেউ কোন অংশে কম নয়। এই শিশুদের সঠিক দিক নির্দেশনার মধ্যে রাখতে পারলে তারাও দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।