সমুদ্রের মাটি-পানি-মাছে মিলেছে মাইক্রোপ্লাস্টিক!

কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের ১২টি স্থান থেকে সমুদ্রপৃষ্ঠের ভূ-উপরিভাগের পানি, সমুদ্রের মাছ ও সমুদ্র তলদেশের (পলি) মাটি পরীক্ষা করে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছে। এসব পলি, পানি ও মাছের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্ট এবং ফুলকার নমুনা বিশ্লেষণে ২৯৩টি মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (বিওআরআই)।

বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) বিওআরআই’র আয়োজিত এক সেমিনারে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় প্রাপ্ত এসব ফলাফল তুলে ধরা হয়।

বিওআরআই জানায়, সমুদ্র তলদেশের প্রতি কেজি পলিতে ১ থেকে ১২টি পর্যন্ত মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যায়। প্রতি ঘনমিটার পানিতে শূন্য থেকে ১টি মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা পাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে কম প্লাস্টিক পাওয়া যায় সামুদ্রিক মাছের শরীরে। ১০টি প্রজাতির ৬২টি মাছের নমুনা বিশ্লেষণ করে ১১টি মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা পাওয়া গেছে।

গবেষণাটির নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সুলতান আল নাহিয়ান।

তিনি বলেন, আমরা ১২টি স্পট থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ৩০ শতাংশ হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড দিয়ে ডাইজেশন করি। এরপর আর্গানিক ম্যাটারিয়ালসগুলো থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিকগুলো আলাদা করি।

তিনি আরও বলেন, তুলনামূলক বিবেচনা করলে কক্সবাজার উপকূলে যে পরিমাণ মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে এটাকে কমই বলা যায়। আশঙ্কার বিষয় হলো এই প্লাস্টিক মাটি, পানি ও মাছে ঢুকে যাচ্ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের পানি, পলি ও মাছের নমুনায় মাইক্রোপ্লাস্টিকের এই উপস্থিতিও স্থানীয় সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রকে গুরুতর হুমকির মুখে ফেলে দিবে।

সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এনডিসি জিয়াউল হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের প্ল্যানিং কমিশনের সাধারন অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সচিব) প্রফেসর ড. মো. কাউসার আহমেদ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারিজ বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. রাশেদ-উন-নবী।

এছাড়াও সেমিনার চলাকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বোর্ডের সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, স্বনামধন্য গবেষকবৃন্দ, ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ, পরিবেশবাদী, সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের পদচারণায় ক্যাম্পাস মুখরিত হয়।

সমুদ্রের মাটি-পানি-মাছে মিলেছে মাইক্রোপ্লাস্টিক! 1

সেমিনারে প্রতিষ্ঠানটির গবেষকবৃন্দ তাদের গবেষণালব্ধ ফলাফল সকলের সামনে তুলে ধরেন এবং এ বছর সাইন্টিফিক অফিসার সুলতান আল নাহিয়ানকে শ্রেষ্ঠ গবেষক হিসেবে সর্ব সম্মতিক্রমে প্রথমবারের মত মহাপরিচালক সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করা হয়।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।