সন্দ্বীপে সরকারিভাবে সিজার অপারেশনের যাত্রা শুরু

বছরের পর বছর ধরে জরুরি প্রয়োজনে সিজার অপারেশন করতে না পারার কারণে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে প্রাণ হারিয়েছেন অসংখ্য প্রসূতি মা। এছাড়া নানান দূর্ভোগে পড়তে হতো সাধারণ মানুষদের। অবশেষে দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে প্রসূতি মায়েদের জন্য জরুরি প্রয়োজনে সরকারিভাবে সিজার অপারেশন সেবা চালু হয়েছে। এর মাধ্যমে যেমন মায়েদের জীবন বাঁচবে তেমনি অর্থ সাশ্রয় হবে বলে মনে করছেন জনসাধারণ।

সোমবার (৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২ টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (গাছুয়া হাসপাতালে) পরীক্ষামূলক প্রথম সফল সিজার অপারেশনের মাধ্যমে একটি পুত্র সন্তান জন্মলাভ করেছে।

সিজার অপারেশনে অংশ নেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মানস বিশ্বাস, গাইনি কনসালটেন্ট ডা. ফারজানা ইয়াছমিন, এনেস্থিসিয়োলজিস্ট ডা. মো. সাইফুল ইসলাম, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আমির খসরু হৃদয়।

সরকারিভাবে প্রসূতি নারীদের জন্য এমন বিশেষ সুবিধা চালু হওয়ায় আনন্দিত সন্দ্বীপের প্রসূতি নারীরা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজার চালুর বিষয়ে হালিমা বেগম নামে একজন প্রসূতি নারী বলেন গুরুত্বপূর্ণ এ সেবাটি থেকে আমাদের প্রসূতি নারীরা এতদিন বঞ্চিত ছিল গতকাল সরকারিভাবে সিজার অপারেশন শুরু হওয়ার কথা শুনে মনে সাহস পাচ্ছি। সরকারিভাবে এ সেবাটি পাওয়ায় অর্থের সাশ্রয় হবে।

জানা গেছে, উপজেলা পর্যায়ে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভবতী মায়েদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সিজারিয়ান অপারেশন চালু করার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ উদ্যোগ নিলেও দীর্ঘদিন সন্দ্বীপে এ সেবাটি চালু করতে পারেনি ওটি (অপারেশন রুম) সমস্যা থাকায়। সন্দ্বীপে বেসরকারিভাবে সিজার অপারেশনের খরচ অনেক বেশি হওয়ায় অনেক মধ্যবিত্ত ও নিম্মবিত্ত পরিবারের পক্ষে অপারেশন করানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। প্রায়ই অর্থের সংকটে এবং সংকটাপন্ন অবস্থায় অনেক প্রসূতি নারীকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে আনতে গিয়ে যাত্রাপথে রোগী মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে।

সন্দ্বীপ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মানস বিশ্বাস দৈনিক চট্টগ্রাম খবরকে বলেন গতকাল আমাদের সরকারিভাবে পরিক্ষামূলক ছিল এ অপারেশন। সন্দ্বীপে সরকারিভাবে সিজার অপারেশনের ব্যয় কেমন হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন সরকারি ফি দিয়ে নামমাত্র মূল্যে এ অপারেশন করানো যাবে।

ওটির জন্য সন্দ্বীপের সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমান মিতা ৫ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছেন বলে দৈনিক চট্টগ্রাম খবরকে জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আমির খসরু হৃদয় দৈনিক চট্টগ্রাম খবরকে বলেন গতকালের অপারেশনটি পরীক্ষামূলক হওয়ায় রাত ১২ টায় হয়েছে ভবিষ্যতে আমরা নির্দিষ্ট অফিস সময়ে অপারেশন কার্যক্রম করব।

তিনি আরও বলেন, যে সকল প্রসূতি রোগী পূর্ব থেকে তাদের তত্ত্বাবধানে থাকবে শুধুমাত্র রোগীর অবস্থার উপর নির্ভর করে প্রয়োজন হলে সিজার অপারেশন করানো হবে। সেক্ষেত্রে রোগীদের আগে থেকেই হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হবে।
সন্দ্বীপে ১ম সিজার অপারেশনে হওয়া নবজাতক কে দেখতে যান সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খীসা। তিনি হাসপাতালে নবজাতক এর পরিবারের হাতে উপহার সামগ্রী তুলে দেন। এ সময় তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানান।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।