জাহাজডৃবির ঘটনার পর থেকে মালিক পক্ষ র্যাংকন ফিশিং গ্রুপের কেউ এখনও পর্যন্ত সহযোগিতা বা খোঁজ নেয়নি। বুধবার ও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিসে গিয়েও মিলেনি কোনো কর্মকর্তার খোঁজ। এখন সাগরের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছু করার নেই—এমন আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে জাহাজডুবি ঘটনায় নিহত এবং নিখোঁজদের স্বজনরা।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে পাঁচটায় কর্ণফুলী উপজেলাধীন ইছানগর সি রিসোর্স জেটি ও সদরঘাট এলাকায় চোখে পড়েছে করুণ দৃশ্য। স্বজন হারিয়ে কেউবা দিশেহারা আবার কেউবা এখনো সাগরে তাকিয়ে আছেন স্বজনের অপেক্ষায়!
এদিন বিকাল পর্যন্ত নৌ-পুলিশ ফায়ার সার্ভিস ও ডুবিয়ে টিমের সদস্যরা উদ্ধার কাজ চালিয়ে ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। তবে জাহাজ ডুবির ৪৮ ঘন্টার পরও উদ্ধার হয়নি জাহাজ এমবি মাগফেরাত। আর নিখোঁজ রয়েছে আরও দুইজন।
বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীতে অভিযান চালিয়ে পতেঙ্গা নৌ বাহিনী ঘাট থেকে ক্যাপ্টেন ফারুক বিন আব্দুল্লাহ, সকালে প্রকৌশলী মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, কর্ণফুলী ব্রিজের নিচ থেকে প্রধান কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম, ডক কর্মচারী রহমত উল্লাহ ও মাষ্টার জহিরুল উদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে চমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
সদরঘাট নৌ-থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, কর্ণফুলী নদীর বিভিন্নস্থানে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে এবং নিখোঁজ রয়েছে দুইজন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ স্বজনদের হাতে তুলে দেয়া হবে।
জানতে চাইলে র্যাংকন গ্রুপের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আদনান একটু পর কথা বলবেন বলে ফোনটা কেটে দেন। এরপর থেকে আর তার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, বুধবার (১২ অক্টোবর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে কর্ণফুলী উপজেলাধীন ইছানগর সি রিসোর্স জেটি এলাকায় প্রপেলার (পাখা) খুলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নদীর ২ নম্বর বয়ার সঙ্গে ধাক্কা লেগে জাহাজ ডুবে নাবিকসহ ২১ জন নিখোঁজ হয়।
তাদের মধ্যে নৌ-পুলিশ ও স্থানীয় মাঝিদের সহযোগিতায় ১৪ জনকে জীবিত উদ্ধার হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন বেশ কয়েকজন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাত ১১ টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান মোহাম্মদ ফয়সাল নামে জাহাজের এক ডুবুরি।
এ ঘটনায় জাহাজটি নিবন্ধনকারী সংস্থা নৌ-বাণিজ্য অফিস তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।