‘চট্টগ্রামে চারটি প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। জলাবদ্ধতা প্রকল্পসহ এই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে এই জলাবদ্ধতার সমাধান হবে’—দাবি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের। সোমবার (৭ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর শিল্পকলা একাডেমীতে দর্শকদের উপস্থিতিতে চ্যানেল আই’তে দৈনিক প্রচারিত টক শো ‘তৃতীয় মাত্রা’ অনুষ্ঠানে এই দাবি করেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম।
চট্টগ্রামের ব্যবসায়িক অবস্থা, আঞ্চলিক অর্থনীতি, বেসরকারি খাত, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, নারী অধিকার, তরুণদের উন্নয়ন ও রাজনীতিসহ নানা বিষয়ে এই অনুষ্ঠানে আলোচনা করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম-১৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন এবং বাংলাদেশর কমিউনিস্ট পার্টি, চট্টগ্রামের সভাপতি অশোক সাহা।
আলোচনায় নাগরিকদের প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুচ ছালাম বলেন—জলাবদ্ধতা নিরসনসহ চারটি প্রকল্প চলমান। এইগুলো ব্যতিক্রমী প্রকল্প। যদি কাজ শেষ না হয় ধরুন ৯৯ শতাংশ কাজ শেষ হলো কিন্তু শতভাগ কাজ শেষ হবে না ততক্ষণ এর সুফল পাওয়া যাবে না। মানুষের মাইন্ড সেট পরিবর্তন করতে হবে। সুফল পেতে সচেতন হতে হবে। খালগুলো কারা দখল করেছে। ময়লা ফেলেছে নালায়, খালে। মাইন্ড সেট পরিবর্তন হলে সুফল আসবেই।
চট্টগ্রামের উন্নয়নের সিদ্ধান্ত চট্টগ্রামের মানুষের হাতে নেই বলে অভিযোগ করে চসিকের সাবেক মেয়র ও জাতীয় পার্টির নেতা মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন—যাদের এখানকার প্রকৃত সমস্যা সম্পর্কে ধারণা আছে তারাই ঢাকায় চট্টগ্রামের প্রতিনিধিত্ব করতে হবে। নাগরিক সমাজের মত বিনিময়ের মাধ্যমে উন্নয়নের কাজ করার উপর গুরুত্ব দেন তিনি। চট্টগ্রামের সাথে বিভিন্ন এলাকার সংযোগ স্থাপনে, রাস্তা নির্মাণের প্রকল্প ছাড়া কর্ণফুলী টানেল তৈরীর প্রকৃত উদ্দেশ্য সাধন হবে না বলে দাবী করেন চসিকের সাবেক এই মেয়র।
নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নের পথে মূল সমস্যা হলো মন্ত্রণালয় ও সেবাপ্রদানকারী সংস্থাসমূহের মধ্যে সমন্বয়হীনতা এবং পরিকল্পনার অভাব। তিনি বলেন, বিএনপির আমলে আমরা যে প্রকল্পগুলো শুরু করেছিলাম তা বর্তমান সরকার এসে চালিয়ে যায়নি। চট্টগ্রামে যথেষ্ট বিনিয়োগ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে এর পেছনে রাজনীতিবিদদের মধ্যে সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করেন তিনি।
অশোক সাহা বলেন, চট্টগ্রামের মূল সমস্যা টাকা নয় নেতাদের মতের ভিন্নতা। চট্টগ্রামে বিনিয়োগ করা হচ্ছে, বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে কিন্তু এর বেনিফিসিয়ার সাধারণ মানুষ নয় বলে দাবী তার। সাধারণ মানুষ ও দলের নেতাদের মধ্যে সমন্বয় কতটুকু তা নিয়ে প্রশ্ন করেন তিনি। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সাধারণ মানুষের উন্নয়ন হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতার পেছনে পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের অভাবকে দায়ী করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে অধ্যাপক সিকান্দার খান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, নগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীসহ দর্শকরা সরাসরি আলোচকদের আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন এবং আলোচকরা তার উত্তর দেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন তৃতীয় মাত্রা’র পরিচালক ও উপস্থাপক জিল্লুর রহমান। এসময় চ্যানেল আই’র বিভাগীয় প্রধান ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।