সীতাকুণ্ডে জমে উঠেছে শিবচতুর্দশী মেলা, ভিড়ে অসুস্থ ২ হাজারের অধিক

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান হিসেবে খ্যাত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ ধামে চলছে শিবচতুর্দশী মেলা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কয়েক লাখ পুণ্যার্থীর সমাগমে জমে উঠেছে মেলা। তবে অতিরিক্ত ভিড়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১২’শ ফুট উঁচু এই পাহাড় থেকে নামার সময় রোববার বিকেল পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার মানুষ অসুস্থ হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ ধামে প্রতিবছর শিব চতুর্দশীর মেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি ভারত, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পূণ্যার্থীরা আসেন। কয়েক লাখ মানুষের অংশগ্রহণে তিনদিন ধরে চলে মেলা। এবার তিথির কারণে চার দিন মেলা চলবে। পূণ্যলাভের আশায় শিবপূজার রাতে ১ হাজার ২০০ ফুট খাঁড়া পাহাড় পাড়ি দিয়ে অনেকে চন্দ্রনাথ ধামে গিয়ে শিবের মাথায় জল ঢালেন।

এবার গত শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে শিব চতুর্দশী মেলা শুরু হয়। প্রথমদিন থেকেই ছিলো উপচে পড়া ভিড়। তবে এই ভিড়ে অসুস্থ হয়েছেন অনেকে। মেলার তৃতীয় দিনে রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আহত হয়ে ১০ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

শনিবার আরও চারজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নুর আহমেদ। তিনি বলেন,নআহত মানে তেমন গুরুতর কিছু নয়। কেউ বয়সের কারণে সিঁড়ি ভেঙে নামতে গিয়ে পায়ে ব্যাথা পেয়েছেন। কেউ অতিরিক্ত ভিড়ের মধ্যে পড়ে গিয়ে সামান্য আহত হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ভিড়ের মধ্যে অসুস্থ হয়ে কেউ বমি করছিল, গরমের কারণে কারও মাথা ঘুরছিল, কারও শরীর ব্যাথা— এরকম অসুস্থ সবাই। গুরুতর কিছু নয়। কেউ পেইন কিলার নিয়েছেন, কাউকে ওরস্যালাইন কিংবা প্যারাসিটামল দেওয়া হয়েছে।

তীর্থযাত্রীদের সেবদানকারী স্বেচ্ছাসেবক বলরাম চক্রবর্তী জানান, শনিবার সন্ধ্যায় শিব চতুর্দশী তিথি শুরুর পর চন্দ্রনাথ পাহাড়ে তীর্থযাত্রীর ঢল নামে। অতিরিক্ত চাপের কারণে শনিবার রাতে মেলা কমিটি পাহাড়ে ওঠার মূল সিঁড়িপথ কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রাখে। এতে জটলা তৈরি হয়। রোববার ভোরে ইকোপার্কের দিকে বিকল্প সিঁড়ি খুলে দেওয়া হয়। তখন রাতভর ভোগান্তিতে পড়া তীর্থযাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে বেশ কয়েকজন আহত হন। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন।

সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সাঈদ বলেন, প্রতিবছর শিব চতুর্দশী মেলায় প্রায় ১০ লাখ মানুষ হয়। এবার তার চেয়েও বেশি মানুষ হয়েছে। এত ভিড় হয়েছে, চাপের মধ্যে কেউ কেউ সামান্য অসুস্থ হয়েছেন। কিন্তু ভিড়ের চাপে কেউ আহত কিংবা পদদলিত এমন বড় কিছু হয়নি। শনিবার রাত থেকে আজ (রোববার) ভোর পর্যন্ত ভিড় বেশি ছিল। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।