বিনামূল্যে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের ঠোঁট ও তালু কাটার চিকিৎসা দিচ্ছে এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম। সম্প্রতি সফলভাবে তিনজন রোগীর অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করা হয়েছে। এভারকেয়ার ফাউন্ডেশন অর্থায়নে এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় প্লাস্টিক ও রি-কন্সট্রাক্টিভ সার্জন ডা. মৃণাল কান্তি সরকার-এর তত্ত্বাবধানে উক্ত চিকিৎসা সম্পন্ন হয়।
এভারকেয়ার ফাউন্ডেশন একটি অলাভজনক সংস্থা। ২০৩০ সাল নাগাদ জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণে সংস্থাটি কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও, তারা সামাজিক অধিকার ও মর্যাদাকে গুরুত্ব দিয়ে সুবিধাবঞ্চিতদের মাঝে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। ঠোঁট ও তালু কাটা শিশুদের মুখে হাসি ফোঁটাতে এভারকেয়ার ফাউন্ডেশন ও এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম একসাথে কাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এ তিনটি অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। উক্ত তিন রোগী হলেন; নাঈম হোসেন (বয়স ১ বছর, বাড়ি – কালাপানি, রামগড়, খাগড়াছড়ি), রান ওয়ে ম্রো (বয়স ১০ বছর, বাড়ি–পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম) এবং আইনুল ইসলাম সামির (বয়স ৪ মাস, বাড়ি–মিরসরাই, চট্টগ্রাম)। অস্ত্রোপচারের পর তিনজন রোগীই এখন সুস্থ আছেন।
এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রামের চীফ অপারেটিং অফিসার সমীর সিং বলেন, “বাংলাদেশে প্রতিবছর ঠোঁট ও তালু কাটা প্রায় ছয় হাজার শিশু জন্ম নেয়, যার মধ্যে অধিকাংশ শিশুই যথাযথ চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এই তিনজন রোগীকে সাহায্য করতে পেরে আমরা আনন্দিত। ক্লেফ্ট প্যালেট সার্জারি একটি জটিল প্রক্রিয়া। কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞ সার্জনদের দল এটি সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হওয়ায় আমরা অত্যন্ত গর্বিত৷ সর্বস্তরের রোগীদের সেরা মানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
রোগীদের অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের জীবন পরিবর্তনকারী এই অস্ত্রোপচারের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রামের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
নাঈম হোসেনের বাবা মাসুদ মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলের এই অস্ত্রোপচারের জন্য আমি এভারকেয়ার হাসপাতালের কাছে কৃতজ্ঞ। তার জন্মের সময় তার তালু একটি কাটা অংশ ছিল। আর্থিকভাবে স্বচ্ছল না থাকায় আমরা এই সমস্যা নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় ছিলাম। তবে এই চিকিৎসার পর আমরা এখন তার স্বাভাবিক জীবন নিয়ে আশাবাদী।”
আইনুল ইসলাম -এর মা বিবি হাজেরা বলেন, “আমি এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তারা আমার ছেলের যথাযথ যত্ন নিয়েছে এবং সুচিকিৎসা নিশ্চিত করেছেন। আমার সন্তান এখন সুস্থ আছে এবং বাকি দশজন শিশুর মতোই বেড়ে উঠতে পারবে।”
সিনিয়র স্টাফ নার্স এবং বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের অর্জনা চাকমা বলেন, “এই চিকিৎসা রান ওয়ে ম্রো’র জীবন বদলে দিয়েছে এবং সেজন্য আমি অত্যন্ত আনন্দিত। সে সবসময় তার সমস্যাটি নিয়ে চিন্তিত ছিল। এখন সে আত্মবিশ্বাসের সাথে কথা বলতে ও প্রাণখুলে হাসতে পারছে। তাকে এই উপহার দেওয়ার জন্য এভারকেয়ার হসপিটালকে ধন্যবাদ।”
এভারকেয়ার হাসপাতাল চট্টগ্রাম দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি হাসপাতাল, যা ক্লেফট প্যালেটসহ সকল রোগীদের সেরামানের স্বাস্থ্যসেবা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।