স্বাধীনতার ৫২ বছর পর বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেন শামসুদ্দিন আহমদ চৌধুরী

শামসুদ্দিন আহমদ চৌধুরী—তখন টগবগে যুবক। দেশজুড়ে বেজে ওঠে যুদ্ধের দামামা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনিও ঝাঁপিয়ে পড়েন মহান মুক্তিযুদ্ধে। স্বাধীনতার সূর্য ছিনিয়ে আনতে চালিয়ে যান মরণপণ যুদ্ধ। তবে দেশ স্বাধীনের অর্ধশত বছর পেরিয়েও এতদিন তার সেই স্বীকৃতি ছিল অধরা।

অবশেষে গত ১৫ জুন (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশ গেজেটের ৭৪৬২ নম্বরে চট্টগ্রামের আনোয়ারার চাতরী ইউনিয়নের বাসিন্দা শামসুদ্দিন আহমদ চৌধুরীর নাম প্রকাশিত হয়। সম্প্রতি সেই গেজেটের কপি হাতে পেয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন আহমদ চৌধুরী ও তার পরিবার। এতে খুশি বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন আহমদ চৌধুরীসহ পরিবারের সদস্য ও তার সতীর্থ বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন আহমদ চৌধুরী উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের ৫ বার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বর্তমানে তারই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তার পুত্র আফতাব উদ্দিন চৌধুরী সোহেল। ১৯৪৭ সালে চাতরী ইউনিয়নের জন্মগ্রহণ করেন রায়হান উদ্দিন আহমদ চৌধুরী ঘরে। ২৪ বছর বয়সে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মাতৃভূমি রক্ষায় মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং সহপাঠীদের সঙ্গে অংশ নেন বিভিন্ন অপারেশনেও।

গত ১৫ জুন (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশ গেজেটের ৭৪৬২ নম্বরে চট্টগ্রামের আনোয়ারার চাতরী ইউনিয়নের বাসিন্দা শামসুদ্দিন আহমদ চৌধুরীসহ ৭৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার ৩১জন বীর মুক্তিদ্ধোর নাম প্রকাশিত হয়।

গেজেটের কপি হাতে পেয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুদ্দিন আহমদ চৌধুরীর পুত্র চাতরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন চৌধুরী সোহেল বলেন, আব্বার যুদ্ধে যাওয়ার গল্পটা মা ও আব্বার মুখ থেকে শুনতাম প্রায় সময়ে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে যখন আব্বা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন তখন টগবগে যুবক ছিলেন এবং বিয়েও করেননি। যুদ্ধের ৫২ বছর পর আব্বার এই গৌরব-উজ্জ্বল স্বীকৃতিতে আমাদের পরিবারের মুখ উজ্জ্বল হলো।

আনোয়ারা উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্মান্ডার আবদুল মান্নান বলেন, স্বাধীনতার পর স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিরা ক্ষমতায় থাকার কারণে আনোয়ারার অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার নাম বাদ পড়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় আসায় এসব মুক্তিযোদ্ধাদেরকে নতুন ভাবে স্বীকৃতির সুযোগ করে দেন। এই জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।