স্বামীর সন্দেহে বাপের বাড়ি, প্রেমিকের সন্দেহে খুন

স্বামী জাহাঙ্গীর সন্দেহ করতেন তার স্ত্রী শাহিদা জাহান সুমি (৩৫) বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত। এনিয়ে তাদের ঝগড়া। এক পর্যায়ে স্বামীর সংসার ছেড়ে এক বছর আগে তিন সন্তানের জননী সুমি উঠেন বাপের বাড়ি। কিন্তু স্বামীর সাথে ডিভোর্স হয়নি।

আরও দুই বছর আগ থেকে সুমি তার চেয়ে ১০ বছরের ছোট আশারাফুল ইসলাম সুজন (২৫) নামে এক যুবকের সাথে বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপন করে। সুজনের বাড়ি নোয়াখালীর সেনবাগে, সুমির শ্বশুর বাড়ির পাশে। সম্পর্কে সুমির দেবর হয় সুজন।

দুই বছরের সম্পর্কও মধুর হয়নি সুমির। এখানেও সন্দেহের শিকার হয় প্রেমিক সুজনের। সুজনের দাবী- অপর এক যুবকের সাথে সুমির সম্পর্কে বিষয়টি সে জানার পর তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিজেকে শোধরে নেয় সুমি। কিন্তু এতকিছুর পরও সুমির জীবন খোয়াতে হয়েছে সুজনের হাতেই।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি তিন সন্তানের জননী সুমির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের চার দিনের মাথায় হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে এমনই তথ্য তুলে ধরেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) আব্দুল ওয়ারিশ।

স্বামীর সন্দেহে বাপের বাড়ি, প্রেমিকের সন্দেহে খুন 1

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিএমপি সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সুমি হত্যাকাণ্ডটি ছিল সম্পূর্ণ ক্লু লেস। সুমিকে নিয়ে হোটেলে উঠার সময় সুজন আরেক জনের জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দেয়। দুজন হোটেলের কক্ষে যাওয়ার এক ঘন্টার মাথায় সুজন কাপড় পরিবর্তন করে হোটেল ত্যাগ করে।

আব্দুল ওয়ারিশ আরও বলেন, সব কিছু ঠাণ্ডামাথায় পরিকল্পনা করে করা হয়েছে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সুজন ঘটনার পর নিজের বাসায় না থেকে বোনের বাসায় আত্মগোপন করেছিল আশুলিয়ায়। সেখান থেকে আমরা তাকে গ্রেপ্তার করেছি।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পুলিশ হালিশহর থানার একটি হোটেল থেকে অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে। স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে তারা হোটেলে উঠলেও সুমিকে খুন করে পরনের কাপড় তার লাশের পাশে রেখে নতুন কাপড় পরে সুজন পালিয়ে গিয়েছিল।

অজ্ঞাত লাশের সন্ধান ও খুনে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে বিস্তারিত জানাতে নগর পুলিশ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে ডিসি আব্দুল ওয়ারিশ ছাড়াও এডিসি (পশ্চিম) পঙ্কজ দত্ত, এডিসি পিআর শাহাদাত হুসেন রাসেল, সিনিয়ির সহকারী কমিশনার আরিফ হোসেন, পাহাড়তলী থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, সুজন টঙ্গী সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের স্নাকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী। ঢাকার একটি নাম করা ক্লিনিকে খণ্ডকালীন চাকরি করতো। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উত্তরায় বসবাস করতো।

এফএম

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।