হত্যার পর অফিসের সেফটিক ট্যাঙ্কিতে লাশ গুম, গ্রেফতার স্বামী

পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে অফিসে এনে সেফটিক ট্যাঙ্কিতে ফেলে দেন স্বামী শওকত আলী (৬৫)।

সোমবার (১৩ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান ডিবি (উত্তর) বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আলী হোসেন।

নিহত লিপি আক্তার শওকত আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী ও বরিশাল জেলার বাসিন্দা। শওকত আলী এমজিএইচ গ্রুপের নাসিরাবাদ শাখার ক্লিনার হিসাবে কর্মরত ছিলেন, তাকে নগরীর খুলশী থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ডিবি (উত্তর) বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, ২০১৩ সালে শওকত ও লিপি আক্তারের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের তিন থেকে চার বছর পর পুনরায় তারা একসঙ্গে স্বামী-স্ত্রী রূপে বসবাস করে আসছিলেন। তাদের পারিবারিক কলহের জের ধরে ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর শওকত লিপি আক্তারকে শ্বাসরোধ করে ভাড়া বাসায় হত্যা করেন। পরে মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশা যোগে নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির ৩ নম্বর রোডের ৬ নম্বর বাসার অফিসে এনে সেফটিক ট্যাঙ্কিতে ফেলে দেন।

গত ৭ এপ্রিল নগরের পাঁচলাইশ থানার নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটির একটি বাসার সেফটিক ট্যাঙ্কি পরিষ্কারের সময় ট্যাঙ্কির ভেতরে এক অজ্ঞাত মহিলার গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। গত ২৯ মে মামলাটি তদন্তের ভার ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা আলী হোসেন বলেন, হত্যাকাণ্ডটির কোনো প্রকার ক্লু না থাকায় গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়। মরদেহটি বিকৃত, গলিত এবং দেহ থেকে মস্তক বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাছাড়া আশেপাশের সিসিটিভিতে দীর্ঘদিনের ফুটেজ সংরক্ষিত না থাকায় অপরাধীকে চিহ্নিত করাও সম্ভব হচ্ছিল না।

তদন্তে ঘটনাস্থলের পাশে থাকা এমজিএইচ গ্রুপের অফিসের সব স্টাফদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে শওকতের প্রাপ্ত তথ্য এবং সিডিআরে প্রাপ্ত তথ্য গরমিল পরিলক্ষিত হওয়ায় তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করে সে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জহিরুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি-উত্তর) মো. কামরুল হাসান।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।