হাদিসুরের মরদেহ রোমানিয়ায় পাঠানো হচ্ছে

রকেট হামলায় নিহত ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’র থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ ইউক্রেন থেকে রোমানিয়া পাঠানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) ভোরে মরদেহ ইউক্রেন থেকে মলদোভা সীমান্তের উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছে। সেখানে পৌঁছানোর পর নেওয়া হবে রোমানিয়ার বুখারেস্টে।

শুক্রবার (১১ মার্চ) তার মরদেহ দেশে আসতে পারে। বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন বিএমএমওএ সাধারণ সম্পাদক মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. সাখাওয়াত হোসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. সাখাওয়াত হোসাইন বলেন, “অফিসিয়াল লোকজন না থাকায় হাদিসুরের মরদেহ ইউক্রেন থেকে রোমানিয়ায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বিলম্বিত হয়। বুধবার (৯ মার্চ) যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।”

এদিকে এমভি বাংলার সমৃদ্ধির ২৮ জন নাবিক গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকায় পৌঁছান। তাঁদের সঙ্গে হাদিসুরের মরদেহ আসতে পারে এমন ধারণা নিয়ে তাঁর বাবা-মা ও ভাই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসেছিলেন। তাঁরা বিমানবন্দরের ভিআইপি গেটের সামনে ছেলের ছবি বুকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

হাদিসুরের মেজো ভাই তরিকুল ইসলাম জানান, ‘জীবিত ২৮ নাবিকের সঙ্গে ভাইয়ার লাশ হয়তো ফিরে পাবো—এ আশা নিয়ে বিমানবন্দরে গিয়েছিলাম। কিন্তু পেলাম না। ’

হাদিসুরের বাবা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সরকার সহায়তা না করলে আমার ছেলের লাশ দেশে আনা সম্ভব নয়। আমি সরকারের কাছে ছেলের লাশটা চাই। ’

উল্লেখ্য, বিএসসির মালিকানাধীন জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ ডেনিশ কোম্পানি ডেল্টা করপোরেশনের অধীনে ভাড়ায় চলছিল। মুম্বাই থেকে তুরস্ক হয়ে জাহাজটি ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে যায়। অলভিয়া থেকে সিমেন্ট ক্লে নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল। এর আগেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলে ২৯ জন ক্রু নিয়ে অলভিয়া বন্দরে আটকাপড়ে জাহাজটি।

গত ২ মার্চ রকেট হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মারা যান। এরপর হাদিসুরের মরদেহ ও বেঁচে যাওয়া ২৮ নাবিককে একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতায় উদ্ধার করা হয়। শনিবার (৫ মার্চ) বাংলাদেশ সময় দুপুরে ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দর সংলগ্ন বাংকার (শেল্টার হাউজ) থেকে মলদোভার পথে যাত্রা শুরু করেন ২৮ নাবিক। রোববার দুপুরে ইউক্রেন সীমান্ত পেরিয়ে মলদোভা হয়ে তারা রোমানিয়া পৌঁছান।

এরপর বুধবার (৯ মার্চ) দুপুর ১২টা ১ মিনিটে ২৮ নাবকিকে বহনকারী তার্কিশ এয়ারের একটি ফ্লাইট ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এরপর ১২ নাবিক বুধবার রাতে নভোএয়ারের একটি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসেন।

এমএফ

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।