ধান ও বিভিন্ন ফসল চাষের জন্য প্রতিবছরের ন্যায় এবারও রাবার ড্যামের মাধ্যমে জমাটবদ্ধ করে রাখা হয়েছিলো চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির হারুয়ালছড়ি খালের পানি। আর সেই জমে থাকা পানিতে জন্মেছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। ফসল পরিপক্ক হয়ে যাওয়ায় এই ড্যামের পানি ছেড়ে দেওয়ার পর মাছ ধরতে নেমেছেন এলাকাবাসী। যা রীতিমতো উৎসবে রূপ নিয়েছে।
শনিবার এবং রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাছ ধরতে ছুটে আসেন শত শত নারী-পুরুষ ও শিশুরা। মাছ ধরার পাশাপাশি তীব্র তাপদাহের মধ্যে খালের শীতল পানিতে গা ভিজিয়ে নেওয়ার সুযোগও হাতছাড়া করেননি কিশোররা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হারুয়ালছড়ি রাবার ড্যাম এলাকা হতে শুরু করে হাজারিখিল-পাটিয়ালছড়ি এলাকা পর্যন্ত সকাল থেকে শিশু কিশোর থেকে শুরু করে আবালবৃদ্ধবনিতা সকলেই মাছ ধরার উৎসবে মেতে ওঠেছে। কেউ মশারি, কেউ হাত জাল, কেউ উৎলা জাল, কেউ পলো, কেউ চ্যাই, কেউ খড়া, কেউবা টেঁটাসহ মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ হাতে নিয়ে সকলেই ব্যস্ত মাছ ধরতে। শিশু কিশোররা খালি হাতেই নেমে পড়ছে খালে বিলে মাছ ধরতে। অনেকেই আবার মাছ ধরার দৃশ্য উপভোগ করতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে এসেছেন।
মাছ শিকার করতে আসা নুরুল আলম বলেন, পুটি মাছ, চিংড়ি মাছ, তেলাপিয়া, রুই, মৃগেল জাতীয় মাছের পাশাপাশি ছোট মাছও ধরা পড়ছে খালে প্রচুর পরিমাণে। মাছ ধরতে আসা ষাটোর্ধ মুসা মিয়া বলেন, প্রতি বছর মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে যদি হারুয়ালছড়ি খালে মাছের পোনা ছাড়া হয়, তাহলে মাছ ধরার উৎসবটি আরো জমে উঠত।
হারুয়ালছড়ি খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আইয়ুব জানান, আমরা আজ সকালে রাবার ড্যামের পানি ছেড়ে দিয়েছি। জমাটবদ্ধ পানিতে থাকা মাছ শিকারে খালের দুই পাড়ের শত শত নারী-পুরুষ মাছ শিকার করতে নামেন। এতে প্রতিজনে ছোট-বড় মিলে ২ থেকে ৫ কেজির মাছ শিকার করে ঘরে ফিরেছে। দিনটি স্থানীয়দের কাছে মাছ ধরা উৎসবে রূপ নেয়। যা দৃশ্যটি ছিল একদম দেখার মতো।
হারুয়ালছড়ি খাল পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির সভাপতি (রাবার ড্যাম) ও ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন চৌধুরী জানান, প্রতি বছর এই সময়ে রাবার ড্যামের পানি ছেড়ে দেয়া হয়। এবার কৃষকের পানির চাহিদা শেষ, ইতোমধ্যেই ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও স্থানীয় ও আশেপাশের গ্রামের লোকজন এসেছে মাছ ধরতে। হাটুজলে শত শত লোক একসাথে মাছ ধরছে এমন দৃশ্য দেখতে ভালোই লাগে।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।