চট্টগ্রামের একমাত্র দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের ৫ লক্ষ বাসিন্দার ভোগান্তি লেগেই আছে নৌ-পথে। দ্বীপাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদে নৌ পারাপারের জন্য ২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫০০ আসনের একটি জাহাজ (এম.ভি আইভি রহমান) উপহার দেন গুপ্তছড়া-কুমিরা নৌ-রুটে। তবে গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে জাহাজ নেই গুপ্তছড়া-কুমিরা নৌ-রুটে। পাখার জটিলতা সারাতে চট্টগ্রামের কর্ণফুলি শিপিং কর্পোরেশনের ডকইয়ার্ডে আছে শীপটি।
জাহাজ না থাকায় প্রতিদিন দুই পাড়ে নদী পারাপারের জন্য অপেক্ষায় থাকে প্রায় দেড় হাজার যাত্রী। বর্ষাকালীন মৌসুম হওয়ায় সাগর এখন বেশ উত্তাল। যাত্রীদের অনেকেই সকাল থেকে ঘাটে অপেক্ষায় থাকতে থাকতে দুপুরও গড়িয়ে যায়, তবুও পার হতে পারেননা এই নৌ রুট। আর এতে করে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির সম্মুখীন হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম আসতে গিয়ে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার গুপ্তছড়া ঘাট থেকে বাড়িতে চলে যান সন্দ্বীপ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক গাজন ফারুক হক খান। তিনি জানান, গত ২ দিন ভোরে ফজরের নামাজের পর স্ত্রীসহ চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম যেতে গুপ্তছড়া ঘাটে অপেক্ষায় থাকেন। সাগর উত্তাল থাকায় স্পীডবোট ছাড়েনি আর বর্তমানে শীপ নেই তাই দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থেকে বাড়ি ফিরে যান তিনি।
ডকইয়ার্ডে থাকা এম.ভি আইভি রহমান জাহাজের বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসির) চট্টগ্রামের মহা-ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) গোপাল চন্দ্র মজুমদার সাথে কথা হলে তিনি জানান, কুমিরা-গুপ্তছড়া নৌ রুট থেকে ডকে আসলেও এতদিন ডকইয়ার্ড খালি না থাকায় উঠাতে পারেনি আগামীকালের জোয়ারে ডকে উঠানোর কথা রয়েছে।
তিনি বলেন, পাখা ( প্রফেলার) এর টিউব যে ডায়ারে বসে সেটা ছোট, সেটা স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বড় করে দিয়ে বুস বসাতে হবে। এবার যেহেতু কাজটা ভিন্ন আগামীকাল ডকে উঠলে কাজের ধরণ অনুয়ায়ী স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগতে পারে। তবে নিশ্চিত করে বলতে পারেনি কত তারিখ থেকে আবার এ নৌ রুটে জাহাজটি যুক্ত হবে। এটি ইঞ্জিনিয়াররা বলতে পারবেন।
সন্দ্বীপের ভোগ্য পণ্যের পাইকারি ব্যবসায়ী ওমর ফয়সাল বলেন, সন্দ্বীপ নৌ রুটে একটি মাত্র জাহাজ এম.ভি আই.ভি রহমান প্রতি মাসে তেলের জন্য গেলে ১ দিন বন্ধ থাকে জাহাজ চলাচল। এছাড়া প্রায় দেখা যায় দুই তিন মাস পর পর ডকইয়ার্ডে যায়। এতে করে সন্দ্বীপের যাত্রীদের অনিরাপদ কাঠের বোটে করে ঝুঁকি নিয়ে নৌ পারাপার করতে হয়। সন্দ্বীপের মানুষের দাবি এ নৌরুটে একাধিক শীপ এবং একাধিক ট্রিপ চলাচল রাখা। তাতে ভোগান্তি ও ঝুঁকিমুক্ত যাতায়াত পাবে দ্বীপের বাসিন্দারা। জাহাজ যখন তেল সংগ্রহ বা মেরামত করতে যাবে সেটার পরিবর্তে যাতে আরেকটি জাহাজ চালু রাখে কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।