চট্টগ্রামের চকবাজার এলাকার এস আলমের মালিকানাধীন ইসলামী ব্যাংকের শাখার লকার থেকে ১৪৯ ভরি স্বর্ণ গায়েব হওয়ার অভিযোগের পর থেকে গ্রহকদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। শনিবার (২ জুন) সকাল থেকে ব্যাংকে ভিড় করে নিজের লকার চেক করেন অসংখ্য গ্রাহক।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ব্যাংকের শাখায় ভিড় করেন অনেক গ্রাহক। নিজেদের লকার চেক করে দেখেন অনেকে। গ্রাহকদের মাঝে যেমন অস্থিরতা দেখা গেছে তেমনি অনেকের মাঝে তৈরি হয়েছে শঙ্কাও। কেউ কেউ লকার থেকে নিজের আমানত উঠিয়ে নেওয়ার কথাও জানান।
একের পর এক গ্রাহক এসে নিজেদের লকার এবং লকারে থাকা স্বর্ণ বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ঠিক আছে কি-না দেখতে চান। ব্যাংকের আনুষ্ঠানিকতা বজায় রেখে একের পর এক গ্রাহক লকার রুমে ঢুকছেন এবং লকার খুলে সবকিছু চেক করে বের হয়ে আসছেন।
নিজের লকার চেক করতে আসা এক গ্রহক বলেন, আমি ব্যবসা করি। এখানে আমার লকার রয়েছে। লকার থেকে স্বর্ণ চুরির খবর শুনার পর থেকে বেশ শঙ্কায় ছিলাম। দোকান বন্ধ করে তাড়াতাড়ি লকারচেক করতে এসেছি। আমার সবকিছু ঠিক আছে। তবে এরকম ঘটনা গ্রাহকদের বেশ শঙ্কিত করছে।
এক নারী গ্রাহক বলেন, ব্যাংকের লকার নিরাপদ মনে করেই আমরা আমাদের স্বর্ণালংকার ব্যাংকের লকারে রাখি টাকা খরচ করে। কিন্তু এখান থেকেই যদি আমাদের জিনিস উধাও হয়ে যায় তাহলে আমাদের আর যাওয়ার জায়গা কোথায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামী ব্যাংক চকবাজার শাখার প্রধান শফিকুল মাওলা চৌধুরী বলেন, আমরা বিষয়টি দেখছি। গ্রাহকের কাছে মূল চাবি আছে, কিন্তু আমাদের কাছে নেই। তিনি এক মাস আগে ব্যাংকে এসে লকারটি পরীক্ষা করেছিলেন। আমাদের কাছে কোনো গ্রাহকের লকারের সঞ্চয় সম্পর্কে তথ্য থাকে না। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, লকারের চাবি কেবল গ্রহকের কাছেই থাকে। তিনি আসলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাকে ভেতরে দিয়ে চলে আসেন। আবার তিনি চেক করে ফিরে আসেন। আমাদের কাছে নিয়মানুযায়ী লকারের কোন তথ্যও থাকে না।
তিনি আরও বলেন, এ রকম কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে ভুক্তভোগী গ্রাহক ইন্স্যুরেন্স কাভারেজ পেয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে ছোট লকারের জন্য ১ লাখ টাকা, মাঝারি লকারের জন্য ২ লাখ টাকা ও বড় লকারের জন্য তিন লাখ টাকা পাবেন গ্রাহক।
এদিকে লকার থেকে ১৪৯ ভরি স্বর্ণ হারানো চট্টগ্রাম নগরীর চট্টেশ্বরী সড়কের বিটিআই বেভারলি হিলসের বাসিন্দা রোকেয়া বারী বলেন, গত ২৯ মে ব্যাংকে গিয়ে দেখি লকারে স্বর্ণালঙ্কার নেই। আমার লকার থেকে কিভাবে এতো বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ গায়েব হয়ে গেলো এ ব্যাপারে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এখনও কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। আমরা এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাচ্ছি।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।