২০ বছর আগের হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ডাকাত দিদারকে ধরলো র‌্যাব

২০ বছর আগের এক হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ডাকাত দিদারুল আলমকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-০৭। দিদারকে মঙ্গলবার রাত ৯.৪৫টায় হাটহাজারী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডাকাত দিদার হাটহাজারির ফটিকালতিরর মৃত সৈয়দ আহাম্মদের ছেলে।

বুধবার (১৭ মে) র‌্যাব-০৭র চান্দগাঁওস্থ মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের বিস্তারিত তুলে ধরেন র‌্যাবের কোম্পানী কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান। সময় র‌্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার, হাটহাজারী কোম্পানী কমান্ডার ও সিনিয়র এএসপি জুনায়েদ জাহেদী উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, ২৫ নভেম্বর ২০০৩ রাত আনুমানিক দেড়াটার দিকে হাটহাজারী এলাকার হাটহাজারী টু মোহাম্মদপুর গামী রাস্তায় অবস্থান নিয়ে সাধারণ লোকজনকে আটক করে তাদের হাত পা বেধে নির্যাতন ও অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা পয়সা ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়েছিল ডাকাত দল। ওই সময় নিহত ভিকটিম জাহাঙ্গীর আলম অন্যান্যদের মত উক্ত রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন ডাকাত দল ভিকটিম জাহাঙ্গীর আলমকে আটক করে তার সাথে থাকা টাকা পয়সা ও অন্যান্য জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ভিকটিম জাহাঙ্গীর ডাকাত দলের সদস্যদের চিনে ফেলে এবং চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে।

মেজর মেহেদী জানান, ডাকাতদের চিনে ফেলায় তারা জাহাঙ্গীরকে হত্যা করে। বিজ্ঞ আদালত সমস্ত সাক্ষ্য-প্রমাণের উপর ভিত্তিতে এবং দীর্ঘ বিচার কার্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে গত ৩০ মে ২০২২ উক্ত নির্মম ও নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনায় আসামী দিদারুল আলম প্রকাশ দিদারকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও বিশ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে ০৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। এবং ৩৯৪/৩৪ ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও বিশ হাজার টাকা অর্থদন্ডসহ বিজ্ঞ আদালত তার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেন। রায়ের পর আমরা তাকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা করে গত রাতে সফল হই।

জানা গেছে, ভিকটিম জাহাঙ্গীর আলমের পায়ের উরুতে রাম দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক ভাবে জখম করে আহত করে পালিয়ে যায় ডাকাত দল। এসময় ভিকটিম জাহাঙ্গীর আলমের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে ভিকটিমকে মূমুর্ষ অবস্থায় এবং মোঃ ফজল ড্রাইভারসহ ভুক্তভোগী আরো ৭/৮ জনকে হাত-পা বাধা ও আহত অবস্থায় দেখতে পায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন ভিকটিম জাহাঙ্গীর আলমকে মূমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভিকটিম জাহাঙ্গীর আলম মৃত্যু বরণ করেন।

মামলা দায়েরের পর ঐ রাতেই আসামী দিদারুল আলম প্রকাশ দিদার হাটহাজারী থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিছুদিন জেল হাজতে থাকার পর আসামী দিদারুল আলম জামিনে বের হয়। এরপর সে নিয়মিত মামলার হাজিরা দিয়ে থাকে। পরবর্তী সময়ে আসামী দিদারুল আলম হাজিরা না দেয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। সে থেকে দিদার পলাতক ছিল।
দিদারের বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা রয়েছে। তাকে হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।