‘ডরে আছি, ক্যানে ভোট দিইয়ূম; মানুষতো বাড়ি ছাড়ি যাইগুর’-(ভয়ে আছি, কেমন করে ভোট দিব; মানুষ বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছে)। এমনটাই বলছিলেন পরৈকোড়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা। কারণ ভোটারদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে চারটি মামলা।
গত সোমবার সন্ধ্যায় পরৈকোড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নৌকা প্রার্থী আজিজুল হক চৌধুরীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করে ফেরার পথে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী-স্বতন্ত্র প্রার্থী একজোট হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটায়।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন চেয়ারম্যান, পুলিশসহ নেতাকর্মীরা। ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার দুই শতাধিক লোককে আসামী করে আনোয়ারা থানায় পৃথক ৪টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। জড়িত থাকায় ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার বিকালে আদালতেও প্রেরণ করে পুলিশ। মামলার আতংকে স্থানীয় ভোটারদের মাঝে বিরাজ করছে ভয়। অনেকেই হয়েছেন ঘর ছাড়াও।
প্রচার-প্রচারণার শেষদিনে হামলা-মামলার ঘটনায় আতংকের মধ্যদিয়ে বুধবার শুরু হচ্ছে আনোয়ারা উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়নের উপ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। বুধবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে ভোট গ্রহণ চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। প্রচার-প্রচারণার শুরু থেকে প্রার্থীদের অভিযোগের ঝুঁড়ি থাকলেও শেষদিনে এসে ঘটে সংর্ঘষের ঘটনা। এঘটনায় বৈরাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নোয়াব আলী, চাতরীর সাবেক চেয়ারম্যান ইয়াছিন হিরো ও পুলিশসহ আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন নেতাও।
এঘটনায় আনোয়ারা থানায় ৪ মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে ১৪ জন আসামী। এমনটায় জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস.এম দিদারুল ইসলাম সিকদার। তিনি জানান, নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আনতে সবধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। গত সোমবারের ঘটনায় ৪টি মামলা হয়েছে এবং জড়িত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান ওসি।
নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ আশরাফের মৃত্যুর পর আসনটি শূণ্য হয়ে পড়ে। এরপর তপশীল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রার্থী আজিজুল হক চৌধুরী বাবুলকে মনোনয়ন দেন দল। এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামীলীগের ৪ বিদ্রোহী প্রার্থীও।
তাদের মধ্যে নাজিম উদ্দিন সুজন (মোটরসাইকেল), মোহাম্মদ আলী (আনারস), হাসান জিয়াউল ইসলাম (ঘোড়া), শেখ নাজিম উদ্দিন (টেলিফোন), আবদুল মালেক মানিক (চশমা) প্রতীক নিয়ে। তবে এ ইউনিয়নের ৫ প্রার্থী এক জোট হয়ে আওয়ামীলীগের প্রার্থী ও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে নগরীতে সাংবাদিক সম্মেলনও করেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, নির্বাচনের সবধরণের প্রস্তুতি শেষ। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা। ভোটারদের আতস্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কোনো প্রার্থী প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।