৫০ দিনের মাথায় বন্ধ হয়ে গেল চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের বিশেষ ট্রেন

ইঞ্জিন, লোকোমাস্টার ও জনবল সংকট দেখিয়ে চালু হওয়ার মাত্র ৫০ দিনের মাথায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের বিশেষ ট্রেনটি। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) থেকে বন্ধ হয়ে যায় এই বিশেষ ট্রেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনন্ডেন্ট মো. শহীদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, অনেক চেষ্টা করেও ট্রেনটি চালু রাখা যায়নি।
এই বিশেষ ট্রেন চলাচল বন্ধ করার পিছনে তিনি কারণ হিসেবে চাহিদার তুলনায় ইঞ্জিন কম থাকাকে দায়ী করে বলেন, দুটি দুর্ঘটনার পর চারটি ইঞ্জিন নষ্ট আর পাঁচটি ইঞ্জিন অতিরিক্ত গাড়িতে সংযোজনের ফলে এই সংকট তৈরি হয়।

চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মিত নতুন রেললাইন গত ১১ নভেম্বর উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ১ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি পর্যটক এক্সপ্রেস নামের আরেকটি ট্রেন চালু করে রেলওয়ে। শুধু ঢাকা-কক্সবাজার রুটের দুটি ট্রেনের প্রতিটিতে ১১৫টি করে আসন বরাদ্দ রাখা হয় চট্টগ্রাম স্টেশনের জন্য।

ঢাকা থেকে পরপর দুটি ট্রেন চালু করলেও চট্টগ্রাম থেকে কোনো ট্রেন দেওয়া হয়নি। রেলওয়ের এমন সিদ্ধান্তে চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষ ক্ষুব্ধ ছিল। স্থানীয় বাসিন্দা ও নাগরিক সমাজের ট্রেন চালুর দাবির প্রেক্ষিতে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে বিশেষ ট্রেন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

এর পর গত ৮ এপ্রিল এই ট্রেন চলাচল শুরু হয়। চালুর পর থেকেই এই ট্রেন জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। যাত্রীদের চাপে এর পর দুই দফায় বিশেষ ট্রেনের সময় বাড়িয়ে ১০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। তবে নতুন করে আর সময় না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামী ১২ জুন থেকে আবার বিশেষ ব্যবস্থায় চালুর চেষ্টা চলছে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচলকারী কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত অনতিবিলম্বে বাতিল করে এই রুটে জনপ্রিয় এই ট্রেন সার্ভিস বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। অন্যথায় এই পথের যাত্রী সাধারণকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারি দিয়েছে যাত্রী অধিকার সুরক্ষায় নিয়োজিত সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকালে দেশের গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এমন হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।