৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞায় চট্টগ্রামের জেলেরা পাচ্ছেন ২ হাজার ৩২২ টন চাল

বঙ্গোপসাগরের এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার জুড়ে প্রায় ৬৮ হাজার ইঞ্জিন চালিত নৌকা আর ২৫১টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলার মাছ শিকার করে। আগামী ৬৫ দিন মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা থাকছে। এতে জেলেদের কলকাকলিতে মুখরিত সমুদ্র থাকবে শান্ত। শুধু পন্যবাহী জাহাজ ও নৌ যানের দেখা মিলবে সাগরে।

বৃহস্পতিবার (১৯ মে) মধ্য রাত থেকে অর্থাৎ ২০ মে থেকে পরবর্তী ৬৫ দিন অর্থাৎ আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। আর সমুদ্র থেকে কূলে ভিড়েছে মাছ ধরার সব নৌযান।

নিষেধাজ্ঞার এই সময়টাতে চট্টগ্রামের ২৭ হাজার তিনজন জেলে পরিবারের প্রতিটি পরিবার ৮৬ কেজি করে চাল পাবেন। আর সারাদেশের জেলেদের জন্য গত বছর ১৬ হাজার ৭২১ মেট্রিক টন ভিজিএফের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।

চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকতা ফারহানা লাভলী বলেন, নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে কর্মহীন হয়ে পড়া চট্টগ্রাম জেলার ২৭ হাজার তিনজন জেলে পরিবারের পাশে থাকছে সরকার। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি জেলে পরিবার ৮৬ কেজি করে চাল পাবেন। প্রথম কিস্তিতে ৫৬ কেজি এবং পরের কিস্তিতে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। এ হিসাবে তিন লাখ ২২ হাজার ২৫৮ কেজি (বা দুই হাজার ৩২২ দশমিক ২৫৮ টন) চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

তবে বছরে এই ৬৫ দিনের বাইরে মা ইলিশ ধরায় ২২ দিন, ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা ধরায় ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা, মার্চ-এপ্রিলের দুই মাসের অভয়ারণ্যের নিষেধাজ্ঞাসহ মোট ১৪৭ দিন নিষেধাজ্ঞা পালন করতে হয় সারা দেশের বিভিন্ন এলাকার জেলেদের।

সামুদ্রিক মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজিম উদ্দিন চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, দেশের মৎস্য সম্পদের সুরক্ষা ও মাছের বংশবিস্তারে ২০১৫ সাল থেকে বঙ্গোপসাগরে প্রতিবছর ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ। শুরুতে শুধু ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রলার নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকলেও ২০১৯ সালে সব ধরনের নৌযানকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। এতে সমুদ্রে মৎস্য প্রজনন বৃদ্ধি পেয়েছে।

তবে সরকারি তালিকার চেয়ে জেলের সংখ্যা কয়েকগুণ। কিন্তু তাদের অনাগ্রহে তালিকাভুক্ত করা যায় না বলে জানা গেছে। কারণ চট্টগ্রামের ২৭ হাজারের বাইরে আছে লক্ষাধিক জেলে। যাদের বাড়ি নোয়াখালী, বরিশাল, ভোলা অঞ্চলে। ফলে তালিকাভুক্ত না হওয়ায় বিশাল একটা সংখ্যা সরকারি সহায়তার বাইরে রয়ে যাচ্ছে।

সোনালী যান্ত্রিক মৎস্য শিল্প সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক বাবুল সরকার বলেন, আমরা জেলেদের মাঝে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য প্রচারণা চালিয়েছি। কারণ তারা যদি সরকারের সহায়তার আওতায় আসে তখন আমাদের ওপর চাপ কমে। তবে জেলেদের মাঝে সচেতনা বেড়েছে। আগের চেয়ে তালিকাভুক্তি বেড়েছে বলেও তিনি দাবী করেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।