অস্ত্র দিয়ে স্ত্রী-ছেলেকে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেলেন নিজেই

সম্পদের লোভে মাদক-অস্ত্র দিয়ে ফাঁসাতে চেয়েছিলেন প্রথম স্ত্রী ও সন্তানকে। তিন লাখ টাকার বিনিময়ে মাদক ব্যবসায়ী আবুল হোসেনকে ঠিক করেন স্বামী মো. ইউসুফ ও দ্বিতীয় স্ত্রী কোহিনুর।

পরিকল্পনা অনুযায়ী নাটক সাজালেও শেষ রক্ষা হয়নি আবুলের। অন্যদের ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেলেন ৬ মামলার আসামি আবুল হোসেন (৩৯)।

বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে আবুল হোসেনকে আটক করে র‍্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে একটি ওয়ান শ্যুটারগান, একটি পাইপগান, এক রাউন্ড কার্তুজ ও ২ হাজার ২৫০ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। তবে মাদক-অস্ত্র নাটক পরিকল্পনার মূল হোতা ইউসুফ ও দ্বিতীয় স্ত্রী কোহিনুর পালিয়ে গেছেন।

বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) র‌্যাব- ৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আটক মো. আবুল হোসেন রাঙ্গুনিয়া মরিয়মনগর ইউপি আমিন কোড়ালপাড়া গুড়া মিয়ার বাড়ির মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে। যদিও তিনি চান্দগাঁও সিএন্ডবি গ্যাস কলোনির পাশে একটি ভবনের চতুর্থ তলায় ভাড়া থাকেন বলে জানিয়েছেন র‍্যাব।

পলাতক অন্য আসামিরা হলেন— রাঙ্গুনিয়া পশ্চিম মুহরা শেখপাড়া সৈয়দবাড়ীর মৃত মাওলানা আবুল খায়েরের ছেলে মো. ইউসুফ (৬০) ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী কোহিনুর (৪০)। তারা চান্দগাঁও দেওয়ান মহসিন সড়ক গোলাপের দোকানের পূর্ব পাশে থাকতেন।

র‍্যাব জানায়, চান্দগাঁও পশ্চিম মোহরা দেওয়ান মহসিন সড়কের গোলাপের দোকানের পূর্ব পাশে নাসরিন আক্তারের ঘরে প্রচুর পরিমাণ মাদক ও অস্ত্র রয়েছে বলে র‍্যাবকে খবর দেন আসামি আবুল হোসেন। ঘরের কোন কোন স্থানে এসব অস্ত্র-মাদক লুকানো রয়েছে তাও জানানো হয় র‍্যাবকে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব-৭ মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়।

ঘটনাস্থলে গিয়ে র‍্যাব সদস্যরা দরজায় কড়া নাড়লে স্বামী মো. ইউসুফ দরজা খোলেন। ইউসুফের প্রথম স্ত্রী নাসরিনের বসতঘরে প্রবেশের কিছুক্ষণের মধ্যে ইউসুফ কৌশলে পালিয়ে যায়।

আসামি আবুল হোসেনের তথ্য মতে, বেডরুমের ফলস ছাদের ওপর ১টি দেশীয় ওয়ান শুটার গান, ১টি দেশীয় লোহার তৈরি ককিং হ্যান্ডেল যুক্ত পাইপ গান, ১টি কার্তুজসহ ওয়্যারড্রপের ড্রয়ারে ২ হাজার ২৫০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়। এ সময় নাসরিন জানান, তিনি এসবের কিছুই জানেন না।

র‍্যাবের অভিযানের সময় উপস্থিত স্থানীয়রাও নাসরিনের কথার সঙ্গে বলেন নাসরিন আক্তার ভাল মানুষ। ফলে আবুল হোসেনের দেওয়া সংবাদ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে আসামি আবুল হোসেন স্বীকার করে বলেন, ইউসুফের প্রথম স্ত্রী নাসরিন ও তার ছেলে সোহানের সঙ্গে জায়গা-জমি নিয়ে ইউসুফ ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী কোহিনুর আক্তারের বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলছে। বিরোধের জেরে মা-ছেলেকে ফাঁসানোর জন্য আবুল হোসেনকে নিয়ে পরিকল্পনা করেন ইউসুফ ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী কোহিনুর।

র‍্যাব আরও জানায়, তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী নাসরিন ও তার ছেলে ঘরে না থাকা অবস্থায় গত সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এসব অস্ত্র, গুলি এবং ইয়াবা ঘরে রেখে আসে তারা। র‍্যাবের অভিযান শেষ হলে এ বাবদ কোাহিনুর ও ইউসুফ ৩ লাখ টাকা দেবেন বলে জানান আবুল হোসেনকে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।