আজ ভয়াল ২৫ মার্চ, কালরাত

আজ ভয়াল ২৫ মার্চ। বাঙালি জাতির জীবনে ১৯৭১ সালের এইদিনের শেষে এক ভয়াল বিভীষিকাময় রাত নেমে এসেছিল। মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পূর্ব পরিকল্পিত অপারেশন সার্চ লাইটের নীলনকশা অনুযায়ী বাঙালী জাতির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার ঘৃণ্য লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র বাঙালীদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

বাঙালীর স্বাধীনতার আকাক্সক্ষাা মুছে দেওয়ার চেষ্টায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গণহত্যা শুরু করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। তারপর নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এসেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা, যা এ বছরই ৫০ বছর পূর্ণ করল।

২০১৭ সাল থেকে আজকের দিনটিকে জাতীয় ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে পাকিস্তানি জল্লাদ বাহিনী দানবীয় নিষ্ঠুরতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বাধীনতাকামী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নাম দিয়ে পাকিস্তানি সেনারা হামলে পড়ে পুরান ঢাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও তৎসংলগ্ন এলাকা, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, পিলখানা ইপিআর (পরে বিডিআর, বর্তমানে বিজিবি) হেডকোয়ার্টারস ও আশপাশের এলাকায়।

পৃথিবীর ইতিহাসে বর্বর গণহত্যার নজির স্থাপন করে হানাদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ওই রাতে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান, যার প্রেক্ষাপটে ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীনতার প্রত্যয়ে দেশজুড়ে শুরু হয় প্রতিরোধযুদ্ধ। এরপর রাজনৈতিক কর্মী, বাঙালি সেনা আর সাধারণ মানুষের সম্মিলিত স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, বিপুল প্রাণহানি আর ধ্বংসযজ্ঞের পর ১৬ ডিসেম্বর উদিত হয় স্বাধীনতার সূর্য।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে নেওয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনও পৃথক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের অংশ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারা দেশে প্রতীকী ‘ব্ল্যাক আউট’ পালন করা হবে। তবে কেপিআই এবং জরুরি স্থাপনা এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে। ২৫ মার্চ রাতে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবন ও স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা যাবে না। তবে ২৬ মার্চ সন্ধ্যা থেকে আলোকসজ্জা করা যাবে।২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসের জাতীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এমএফ

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।