আপনি শেখের বেটি, ‘আমাদের মা—আমাদের বাপ’

চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনের পর প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারিত হওয়ার পর দেশের চারটি জেলায় চা শ্রমিকদের সাথে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেছেন। সেখানে আবেগ-আপ্লুত শ্রমিকরা বলেছেন- জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের নাগরিকত্ব দিয়েছেন। আপনি শেখের বেটি। আপনি আমাদের মা-আপনিই আমাদের বাপ। আমাদেরকে ভূমির অধিকার দিন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদেরকে ভূমির অধিকার দিয়ে আরও উন্নত জীবন যাপনের সুযোগ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘জাতির পিতা যেমন নাগরিকত্ব দিয়েছিলেন, তেমনি আপনাদের (চা শ্রমিকদের) প্রতি আমার আলাদা দায়িত্ব রয়েছে। আমি সবসময় সেই অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছি। আওয়ামী লীগ সরকার চা শ্রমিকদের উন্নত জীবন নিশ্চিত করার জন্য সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। আপনাদের আমি ঘর করে দেবো, ভূমি অধিকারও দেবো।

শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চা শ্রমিকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী। মূখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় ভিডিও কনফারেন্সে চট্টগ্রাম প্রান্ত থেকে ফটিকছড়ির কর্ণফুলী চা বাগানে হাজার হাজার শ্রমিক অংশ নেয়।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় এ প্রান্ত থেকে সংযুক্ত হন বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন, পুলিশের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান, পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক, বাংলাদেশ চা বোর্ডের সদস্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী, বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মাদ রুহুল আমীন, ফটিকছড়ির ইউএনও মো.সাব্বির রাহমান সানি, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুর রহমান, ওমর ফারুকসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ।

স্থানীয় সাংসদ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, সংরক্ষিত আসনের মহিলা সংসদ খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সেক্রেটারি চৌধুরী ফরিদ, ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আবু তৈয়ব, পৌর মেয়র ইসমাইল হোসেনসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দও সংযুক্ত ছিলেন।

কর্ণফুলী চা বাগানের শ্রমিক লাকী নারায়ণ আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্য দেন। তিনি চা বাগান এলাকায় মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার দাবি জানালে প্রধানমন্ত্রী তা বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন।

চা শ্রমিক সন্তান মুনমুন ঘোষ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, চা শ্রমিকের সন্তান হয়েও আমি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সুযোগ পেয়েছি। পাশাপাশি আমি স্নাতক শ্রেণিতে পড়ছি। ২০৪১ সালে উন্নত দেশের যে স্বপ্ন আপনি দেখিয়েছেন সেই উন্নত দেশ গড়ার একজন সৈনিক হিসেবে কাজ করে যাবো।

ভিডিও কনফারেন্সে চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার, সিলেট ও হবিগঞ্জ থেকে যোগদানকারী চা শ্রমিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন তৎকালীন চা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন (১৯৫৭ সালে) তখন এই শিল্পের বিকাশ ও চা শ্রমিকদের উন্নত জীবন নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। আমরাও চা শ্রমিকদের সকল সমস্যা সমাধান করে উন্নত জীবন যাপনের সুযোগ দিতে সচেষ্ট রয়েছি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।