চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে একটি প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে আগে খাবার নেওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নারীসহ ৫ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত শনিবার রাত তিনটায় উপজেলার জুলধা ইউনিয়নের পাইপের গোড়া এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
এতে আহত হয়েছেন— মো. জাহাঙ্গীর আলম (৫০), মোজাম্মেল হোসেন (২৩), মো. আলমগীর (৪০), আরাফাত হোসেন (১৮), আঞ্জুমান আকতার (২০)। তারা সকলে জুলধা পাইপের গোড়া এলাকার।
এ ঘটনায় বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কর্ণফুলী থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ।
পুলিশ ও অভিযোগ সূত্র জানায়, শনিবার দুপুরে কর্ণফুলীর এইচএম স্টিল কর্পোরেশন লিমিটেডে একটু অনুষ্ঠানে আগে খাবার নেওয়াকে কেন্দ্র করে একই এলাকার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও মোহাম্মদ মুছার লোকজনদের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে। এঘটনার জের ধরে রাত তিনটার দিকে উভয় পক্ষের মধ্যে আবারও মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন নারীসহ ৫ জন। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং স্থানীয়দের সহযোগিতার আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আহত জাহাঙ্গীর আলম (৫৮) বলেন, এইচএম স্টিল লিমিটেডের অনুষ্ঠানে কর্তৃপক্ষের অনুরোধে মেহেমানদের অ্যাপায়ন করছিলো আমার ছেলে। সেখানে মেহেমানদের আগে মুছার লোকদের খাবার দেওয়ার জন্য কথাকাটাকাটি ও পরে হাতাহাতি হয়। এটি সেখানে সমাধা হয়। কিন্তু রাতের স্থানীয় মোহাম্মদ মুছা রাতের আঁধারে লোকজন এনে আমার বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় আমাদের দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয়দের সহযোগিতার প্রাণে রক্ষা পাই। তিন দিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার বাড়িতে আসি এবং থানায় অভিযোগ দায়ের করি।
মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে কর্ণফুলী থানায় মোহাম্মদ মুছা (৪০), নুর মোহাম্মদ (২০), সাজ্জাদ (২০), শাহীন (২৫), বেলাল (২৫), ফয়সালসহ (২০) অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
জুলধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাজী নুরুল হক বলেন, খাবার নেওয়াকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতের আঁধারে জাহাঙ্গীরের বাড়িতে তারা হামলা চালিয়েছে। সত্যি দুঃখজনক ঘটনা এটি। তাদের সামাজিক বৈঠকের ডাকা হলেও প্রতিপক্ষের লোকজন বৈঠকে আসেনি। ঘটনাটি আমি থানা প্রশাসনকে জানিয়েছি।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত মোহাম্মদ মুছা বলেন, খাবার নিয়ে এলাকার ছেলেদের সঙ্গে এইচএম স্টিলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটলে কর্তৃপক্ষের অনুরোধে আমি সমাধানের চেষ্টা করি। কিছু ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করছে।
কর্ণফুলী থানার শাহমীরপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সিরাজ জানান, খাবার নেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে রাতে মারামারি হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে জানতে চাইলে এইচএম স্টিল লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ সামসুদ্দোহা বলেন, শনিবারের অনুষ্ঠান ছিলো আমাদের কারখানায়। তবে খাবার নিয়ে মারামারির ঘটনার কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। যাদের সঙ্গে ঘটনা তারা কারখানার কেউ না বাহিরের লোক।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ বলেন, এঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছেন। তদন্ত করে পরবর্তীতে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।