কর্মকর্তাদের তোপের মুখে অফিস ছাড়লেন চবির রেজিস্ট্রার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসানের পদত্যাগ ও পূর্ণকালীন রেজিস্ট্রার নিয়োগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার সমিতির নেতারা। অবস্থান কর্মসূচির এক পর্যায়ে নিজ দপ্তর থেকে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান বেরিয়ে যান বলে জানা গেছে।

রোববার (১ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে সংগঠনটির নেতারা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান নেন।

জানা গেছে, অবস্থান কর্মসূচি চলাকালীন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান অবস্থানরত কর্মকর্তাদের নিয়ে উপাচার্যের দপ্তরে গেলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করেন। আশ্বাসে সন্তুষ্ট না হয়ে কর্মকর্তারা পুণরায় অবস্থান কর্মসূচি পালনের এক পর্যায়ে দুপুর ১টার দিকে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) তার দপ্তর ত্যাগ করে বেরিয়ে যান।

অফিসার সমিতির নেতারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণকালীন রেজিস্ট্রার নিয়োগ চেয়ে গত ১৮ ডিসেম্বর উপাচার্য শিরীণ আখতারকে চিঠি দিয়েছিলেন সমিতির নেতারা। সেদিন তারা রেজিস্ট্রার নিয়োগের জন্য চার দিন সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। অন্যথায় ১ জানুয়ারি থেকে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে কর্তৃপক্ষ দাবি না মানায় তারা আজ রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে অবস্থান নিয়েছেন।

সমিতির নেতাদের অভিযোগ, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের ব্যাপারে আন্তরিক নন। কর্মকর্তাদের বিভিন্ন দাবির বিষয়ে আলোচনা করতে গেলে তিনি কোনো ধরণের সহযোগিতার মনোভাব দেখান না। নিয়ম অনুযায়ী, রেজিস্ট্রার বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি। কিন্তু বর্তমান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের ক্ষেত্রে তা দেখা যাচ্ছে না।

চবির অফিসার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হামিদ হাসান নোমানী বলেন, রেজিস্ট্রার পদটি কর্মকর্তাদের পদ। তবে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত হিসেবে এ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এতে রেজিস্ট্রারের দপ্তরের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের আইন অনুযায়ী কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে কাউকে এ পদে নিয়োগ দেওয়া হোক।

তিনি আরও বলেন, আমরা আজকে সারাদিন অবস্থান করেছি। দাবি মানা না হলে আগামীকাল আবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করব। দাবি মানা না হলে সকল কর্মকর্তাদের নিয়ে কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, আমরা চাই না বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অচলাবস্থা তৈরি হোক। কিন্তু দাবি মেনে না নিলে আমরা কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হব। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আমি দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করে আসছি। কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসহযোগিতামূলক কোনো মনোভাব আমি দেখাই নি। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে সুষ্ঠুভাবেই আমি আমার কাজ করেছি।

দপ্তর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, তারা আমার অফিসে সকাল থেকে বসে ছিল। তাদের কারণে আমি কাজ করতে পারছিলাম না। তাদের কারণে অস্বস্তিবোধ করায় আমি অফিস থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলাম।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।