ঘূর্ণিঝড় মোখা—বাসার বেলকনি এখন কিচেন, ইট-কাঠে অস্থায়ী চুলা!

ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে কক্সবাজারের মহেশখালিতে অবস্থিত দু’টি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম নগরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সংকটের প্রভাব পড়েছে রান্নাঘরে। অনেক এলাকায় শনিবার সকাল থেকে গ্যাস ছিল না। তবে রোববার সকাল থেকে সেটি প্রকট আকার ধারণ করেছে।

রোববার (১৪ মে) চট্টগ্রাম নগরীর হেমসেন লেন, নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি, চান্দগাঁও, হালিশহর এলাকার বাসিন্দারা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। অপেক্ষাকৃত ধনীরা ইলেক্ট্রিক চুলা, স্টোভ ব্যবহার করছেন। আর অন্যরা বাসার বারান্দায় ইট বসিয়ে শুকনো বাঁশ-কাট দিয়ে রান্না করছেন।

কাজির দেউড়ির ভিআইপি টাওয়ারের বাসিন্দা নুর জাহান বলেন, শনিবার গ্যাস না থাকায় সবাই গিয়ে ভাইয়ের বাসায় খেয়ে আসছি। তাদের বাসায় সিলিন্ডার গ্যাসে রান্না হয়। আজ নিজেরা ইলেক্ট্রিক চুলায় রান্না করছি।

হেমসেন লেনের বাসিন্দা লাকি দাস বলেন, গতকাল থেকে গ্যাস নেই। শনিবার দুপুর-রাতে হোটেল থেকে এনে খেয়েছি। সকালে তিনটা ইটি দিয়ে বাঁশের লাড়কি জ্বালিয়ে রান্না করছি।

চান্দগাঁওয়ের উম্মে জান্নাত এবং হালিশহরের গৃহিনী কহিনুরেরও একই কথা। শনিবার থেকে লাইনে গ্যাস নেই। কেউ স্টেভে আবার কেউ হোটেল থেকে এনে শনিবার পার করেছেন। রোববার থেকে ইটের চুলায় কাট জ্বালিয়ে রান্না করছেন।

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশ কোম্পানী লিমিটেড—কেজিডিসিএল ব্যবস্থাপ রফিকুল ইসলাম জানান, এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ হওয়া শনিবার থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটছে। দুপুরের দিকে রিজার্ভ গ্যাস পাওয়া গেলেও রোববার রিজার্ভও শেষ হয়ে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে ১৭ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।

এদিকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সাময়িক এই অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি শান্ত হলে অতিদ্রুত গ্যাস—বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হবে।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম নগরীর বাসা-বাড়িতে প্রায় ৩২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিরা রয়েছে। যারা প্রায় পুরোটাই মহেশখালী এলএনজি টার্মিনাল থেকে পাওয়া যেতো। গ্যাস সংকটে শনিবার থেকে সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো বন্ধ রয়েছে। কলকারখানাগুলোতেও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।