চট্টগ্রামে বার্ন হসপিটাল—শেষ হচ্ছে অপেক্ষার পালা

বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে চীনের রয়েছে বিশাল বিনিয়োগ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন প্রচুর চীনা নাগরিকও। তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা, চিকিৎসার নিশ্চয়তায় চীন সরকার চট্টগ্রামে একটি বার্ন হসপিটাল নির্মাণে ২০১৭ সাল থেকেই চেষ্টা চালাচ্ছিলো। চট্টগ্রামে একের পর এক অগ্নিকাণ্ড, শিল্প কারখানায় বিস্ফোরণ এই অঞ্চলে বার্ন হসপিটালের প্রায়োজনীয়তাকে আরও জোরালো করেছে। গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন—দেশের ৮ বিভাগেই ৮টি বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতাল হবে। ঠিক এক বছরের মাথায় চট্টগ্রামে ১৫০ শয্যার বার্ন হসপিটাল নির্মাণের লক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে।
শনিবার (১১ মার্চ) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে চীনের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হবে। শতভাগই অনুদান সহায়তায় পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ২০ মিলিয়ন ইউএস ডলার ব্যয় নির্ধারণ করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাস সংলগ্ন এলাকায় (গোঁয়াছি বাগান) ১৫০ শয্যার বার্ন হসপিটাল নির্মাণের লক্ষ্যে শনিবার একটি চুক্তি স্বাক্ষর হবে। এই চুক্তির পর মূল চুক্তি স্বাক্ষর হবে। এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরা হবে। বার্ন হসপিটাল নির্মাণে অফিসিয়াল ওয়ার্ক এ পর্যন্ত যতটুকু অগ্রসর হয়েছে তাতে বলা যায় আগামী ২ বছরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করে বিশেষায়িত এ বার্ন হসপিটাল সেবা চালু করা যাবে।

জানা গেছে পুর্ণাঙ্গ বার্ন হসপিটালটি চমেক হাসপাতালে বিশেষায়িত বার্ন ইউনিট হিসেবে পরিচালিত হবে। বার্ন হসপিটাল স্থাপনের লক্ষ্যে ৫ সদস্যের চীনা প্রতিনিধি দল ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। ৪ মার্চ স্থাপত্য অধিদপ্তরের এক স্থপতিসহ (আর্কিটেক্ট) চট্টগ্রামে আসেন সারাদেশে বার্ন চিকিৎসা সম্প্রসারণের দায়িত্ব পাওয়া ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি গোঁয়াছি বাগান পরির্দশন করেছেন। তার সাথে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান, চমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আক্তার, হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রস্তাবনা অনুযায়ী, ১৫০ শয্যার বিশেষায়িত এ বার্ন হসপিটালে ১০টি আইসিইউ, শিশুদের জন্য ৫টিসহ মোট ২৫টি এইচডিইউ এবং অত্যাধুনিক দুটি অপারেশন থিয়েটার থাকবে। জরুরি বিভাগের পাশাপাশি বর্হিঃবিভাগও থাকবে।
প্রতি ফ্লোরে স্পেস থাকবে ১৬ হাজার বর্গফুট করে ৬ তলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ৬ তলা এই ভবনের পাশাপাশি ইক্যুইপমেন্ট (সরঞ্জাম) স্থাপনের জন্য আরও একটি একতলা আলাদা ভবন নির্মাণের প্রস্তাবনা রয়েছে। একতলা ভবনটিতে অক্সিজেন প্ল্যান্ট, সাব–স্টেশন ও জেনারেটরসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য সরঞ্জাম স্থাপন করা হবে। প্রায় এক একর জায়গার উপর বিশেষায়িত এ বার্ন হসপিটাল গড়ে তোলা হচ্ছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।