চট্টগ্রামে বিজয় মেলা শুরু ১৩ ডিসেম্বর

‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয়, বীর বাঙালির অহংকার’- এ শ্লোগান নিয়ে চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন গোলচত্বর সম্মুখে চার দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা শুরু হচ্ছে আগামী ১৩ ডিসেম্বর। শিখা প্রজ্জ্বলন ও জাতীয় পতাকা এবং মেলা পরিষদের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে মেলার কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।

বুধবার ( ৩০ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেললন এ কথা জানান বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব মোহাম্মদ ইউনুস।

বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন এবং মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা প্রগতিশীল মন-মানসিকতায় উদ্বুদ্ধ সকলের কাছে একটি শক্তিশালী প্লাটফর্ম হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। সুদীর্ঘ ৩৪ বছরে চলার পথে দেশের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় তার গতি কখনো দুর্বার, আবার কখনও শ্লথ ছিল। কখনো কখনো এ আয়োজন থমকে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসন্ন বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশকে রক্ষার্থে বিশেষজ্ঞদের উপায় খুঁজে বের করতে নির্দেশ দিয়েছেন। শকুনের থাবা থেকে বাংলাদেশের শোষিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষকে রক্ষার জন্য স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেভাবে পথ দেখিয়েছিলেন তেমনি করে তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা এবারের বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার হাত থেকে উত্তরণের উপায় বের করবেন।

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদ এবার অসংখ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে আউটার স্টেডিয়ামে মৃৎ, হস্ত ও কুটির শিল্প, পাটজাত দ্রব্যসহ পণ্যমেলা ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা অনুষ্ঠান। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধের চলচিত্র প্রদর্শন, বিজয় শিখা প্রজ্জ্বলন, বর্ণাঢ্য বিজয় র‌্যালি ও নারী সমাবেশের আয়োজন করা হবে।

তিনি বলেন, দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট আমাদেরকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে ৪ ডিসেম্বর চট্টগাম পলোগ্রাউন্ড ময়দানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা, ১২ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন, ১৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন, ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মহাসম্মেলন কর্মসূচিতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনায় বিশ্বাসী সকলের সহযোগে অংশ গ্রহণের সুবিধার্থে এবারের বিজয় মঞ্চের অনুষ্ঠান কার্যক্রম সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।

মহাসচিব আরও জানান, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট পরিস্থিতিতে স্বাধীনতাবিরোধী ৭১ এর ঘাতক দালাল, যুদ্ধাপরাধীরা তাদের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের যোগসাজশে সুকৌশলে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্যকে টার্গেট করেছে। এদের পূর্বসুরীরা ’৬৬ টির ছয় দফা আন্দোলনে, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে, ’৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুকে টার্গেট করেছিল। ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট কালো রাত্রিতে তারা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেও ক্ষান্ত হয়নি। ধর্মের অপব্যাখ্যা করে তারা ভাষ্কর্য এবং মূর্তি নিয়ে ফতোয়া দিয়ে এ দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার চেয়ারম্যান, তারুণ্যের অহংকার শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি তাঁর পিতা চট্টলার সিংহ পুরুষ আলহাজ এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীর ন্যায় মৌলবাদ প্রতিরোধে চট্টগ্রাম থেকে প্রথম সোচ্চার হয়েছেন। পরবর্তীতে এ প্রতিরোধ কর্মসূচি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা চট্টগ্রামবাসী, চট্টগ্রামের মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদ, চট্টগ্রাম বীর মুক্তিযোদ্ধারা ও মুক্তিযোদ্ধার পরবর্তী প্রজন্ম তাঁর সাথে আছি।

সংবাদ সম্মেলেন আরো উপস্থিত ছিলেন- আলহাজ বদিউল আলম, জাহাঙ্গীর চৌধুরী সিইনসি, পান্টু লাল সাহা, সৈয়দ মাহমুদুল হক, ফরিদ মাহমুদ, চৌধুরী ফরিদ, আবুল হোসেন আবু, মো. ইউসুফ, নৌ কমান্ডো আনোয়ার হোসেন, কালাম, রাজেস ইমরান, আরফাতুল ইসলাম ঝিনুক প্রমুখ।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।