চট্টগ্রামে সাংবাদিক নির্যাতন—সেই ইটভাটা ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন

জাতীয় ইংরেজি দৈনিক দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের স্টাফ করেসপনডেন্ট আবু আজাদকে যে ইটভাটায় নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছিল সেই অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। পরিবেশ অধিদপ্তর এবং চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহযোগিতায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের অবৈধ এবিসি ইটভাটায় অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন।
সোমবার (৯ জানুয়ারি) পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত। অভিযানে এবিসি ইটভাটার মালিকপক্ষ কোন লাইসেন্স দেখাতে পারেনি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, রাঙ্গুনিয়ার ইসলামপুরের এবিসি ইটভাটা সম্পূর্ণ অবৈধ ছিল। জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশে আমরা অভিযান চালাই। অভিযানে এবিসি কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তাই আমরা সেটির চুল্লি, চিমনি গুড়িয়ে কাঁচা-পাকা প্রায় এক লাখ ইট মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছি।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, পরিবেশ রক্ষায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা আছে। আমরা পরিবেশ রক্ষায় সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। তারই অংশ হিসেবে আপনারা দেখেছেন বিগত কয়েকদিন একটানা অভিযান চলছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

একই দিন অপর অভিযানে রাঙ্গুনিয়ার বেতাগী ইউনিয়নের কেবিএম ইটভাটার মালিক মোঃ কামাল উদ্দীনকে পাহাড় থেকে এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি কাটার দায়ে ৮ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলেও জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের মঘাছড়ি এলাকায় অবৈধ ইটভাটার সংবাদ সংগ্রহে গেলে ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী নির্দেশে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মহিউদ্দীন তালুকদার (মোহন) অস্ত্র ঠেকিয়ে জিম্মি করে মারধর করে। ওই ঘটনায় সাংবাদিক আবু আজাদ বাদী হয়ে রাঙ্গুনিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন। এবিসি ইটভাটার ম্যানেজার কাঞ্চন কুমার তুরিকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ একদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

আবু আজাদকে নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষা স্বোচ্ছার সিপিজে (কমিটি ফর প্রোটেক্ট জার্নালিস্ট) উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশনে আগামী ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে বলেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।