চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার এ্যাওয়ার্ড প্রদান ও সমাপনী অনুষ্ঠান

চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি আয়োজিত ২৯তম চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২২ এ অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে এ্যাওয়ার্ড প্রদান ও সমাপনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) বিকেলে আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চিটাগাং চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি মেলায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বর্তমান বিশ্বে খাদ্য ও জ্বালানী সংকট চলছে। এক্ষেত্রে আগামী দিনের জন্য প্রস্তুতি হিসেবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী ব্যবহারে আমাদের সাশ্রয়ী হতে হবে। রপ্তানি বহুমূখীকরণ সম্ভব না হলে বৈদেশিক মুদ্রার উপর চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে। বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের রিজার্ভ সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে।

শিক্ষা উপমন্ত্রী আরো বলেন, ছয় মাসের অধিক আমদানি ব্যয় নির্বাহ করার সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। দেশের অর্থনীতির বেশির ভাগ নির্দেশক সন্তোষজনক। তবে ভবিষ্যতের চাহিদা বিবেচনায় আমাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে পরিবর্তনের মাধ্যমে শিল্প ও সেবা খাতের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে। তিনি শিল্পোদ্যোক্তাদের আঠার বছরের উর্ধ্বে ছাত্র-ছাত্রীদের ইন্টার্ন হিসেবে নিয়োগ প্রদান এবং নিজেদের কর্মীদের দক্ষ করার লক্ষ্যে বিনিয়োগের আহবান জানান।

বিশেষ অতিথি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, করোনা অভিঘাতের পরেও সরকারি ইনসেনটিভসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ৫-৬% প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে উন্নত বিশ্বও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। সরকার ব্যয় সংকোচনের মাধ্যমে প্রায় বত্রিশ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করেছে। তিনি জঙ্গল সলিমপুরে সরকারি জায়গায় বিশেষায়িত হাসপাতাল, স্পোর্টস ভিলেজ, ইকো পার্ক এবং গ্রীণ ইন্ডাষ্ট্রি নির্মাণে সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।

চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে বাংলাদেশ যোগাযোগের ক্ষেত্রে একধাপ এগিয়ে গেছে। বৃহত্তর চট্টগ্রামে টানেল, গভীর সমুদ্র বন্দর, কক্সবাজার রেললাইন, বে-টার্মিনাল ইত্যাদি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরে দশ লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড অব্যাহত রাখতে বন্দর সচল রাখা এবং চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়ক নির্বিঘ্নে চালু রাখার ক্ষেত্রে চেম্বার সবসময় সরকারের সাথে কাজ করে থাকে।

মাহবুবুল আলম আরো বলেন, দেশীয় বিভিন্ন পণ্যের পরিচিতির লক্ষ্যে প্রতিবছর চেম্বার এই মেলা আয়োজন করে। তিনি অগ্রাধিকারভিত্তিতে বে- টার্মিনালের কাজ সম্পন্ন করা, মেলার জন্য একটি স্থায়ী ভেন্যু প্রদান, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সরকারি দপ্তরসমূহের ক্ষমতায়ন, আইসিডিসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ব্লু-ইকনোমির সম্ভাবনার সদ্ব্যবহারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের প্রতি আহবান জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর এবং চেম্বার পরিচালক ও সিআইটিএফ-২০২২ কমিটির চেয়ারম্যান এ. কে. এম. আক্তার হোসেন বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠান শেষে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে জুরি বোর্ড কর্তৃক শ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্যাভিলিয়ন এবং স্টলকে এ্যাওয়ার্ড ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এবারের মেলায় প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ক্যাটাগরীতে প্রথম আবুল খায়ের কনজ্যুমার প্রোডাক্টস লিঃ, দ্বিতীয় বিআরবি ক্যাবল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিঃ এবং তৃতীয় প্রাণ আরএফএল গ্রুপের মিঠাই; স্টলসমূহের মধ্যে মিল্কভিক বাংলাদেশ লিঃ, গোল্ডেন ইনফিনিটি লিঃ ও শার্টবাজার যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেরা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।