চবিতে বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস উদাযাপন, ঢাবিকে হারিয়ে রেইসে চ্যাম্পিয়ন চবি

‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য অংশীদারিত্ব’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বন্যপ্রাণী দিবস উদযাপন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বার্ড ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে দিবসটি পালিত হয়। ‘আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ওয়াইল্ড রেইস’-এ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চবি, রানারআপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
শুক্রবার (৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের অডিটোরিয়ামে এ উপলক্ষ্যে সেমিনার ও বন্যপ্রাণী বিষয়ক তথ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়।

এদিন সকাল ১০টায় প্রধান অতিথি হিসেবে বন্যপ্রাণী দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরিণ আখতার। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন বন্যপ্রাণী গবেষনায় বঙ্গবন্ধু এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত চবি প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সুপারনিউমেরারি অধ্যাপক ড. মোঃ ফরিদ আহসান।

প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ মনজুরুল কিবরীয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে, নেচার এন্ড কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টের নির্বাহী পরিচালক এস.এম. মনজুরুল হান্নান খান, ভেনম রিসার্চ সেন্টারের প্রিন্সিপ্যাল ইনভেস্টিগেটর ও চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক ডাঃ অনিরুদ্ধ ঘোষ, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সভাপতি জালাল আহমেদ, চিটাগাং বার্ড ক্লাবের উপদেষ্টা ডা. মহিউদ্দিন শিকদার, পিটাছড়া বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মাহফুজ আহমেদ রাসেল।

এর আগে ভোর সাড়ে ৬টায় রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী দিবস উৎযাপনের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটিসহ মোট তিনটি দলের অংশগ্রহণে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

যার মধ্যে রয়েছে ‘আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ওয়াইল্ড রেইস’ এই প্রতিযোগিতায় দলগুলো বিভিন্ন বন্য এলাকায় গিয়ে বন্যপ্রাণী সনাক্ত করে। যে দল যতবেশি বন্যপ্রাণী সনাক্ত করতে পারে সেদল চ্যাম্পিয়ন নির্বাচিত হয়। এক ঘন্টা সময় ধরে চলা এ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন নির্বাচিত হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দল। রানারআপ হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দল।

ছিল ‘আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বন্যপ্রাণী চেনা প্রতিযোগিতা’। এই প্রতিযোগিতায় স্লাইডে বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী প্রদর্শন করা হয়। সেখান থেকে দলগুলো প্রাণীদের সনাক্ত করে। যে দল যতবেশি সনাক্ত করতে পারে সে দলকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। এতে বিজয়ী হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দল এবং রানারআপ হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দল।

আরো ছিল ‘ট্রেজার হান্ট’। এই প্রতিযোগিতায় নামহীন বিভিন্ন ধরনের মৃত প্রাণীর নমুনা দেওয়া হয়। যে দল বেশি প্রাণী সনাক্ত করতে পারে সে বিজয়ী হিসেবে বিবেচিত হয়। এতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দল চ্যাম্পিয়ন হয়।

এছাড়াও ছিল বন্যপ্রাণী পাজল ‘প্রতিযোগিতা’।
যেখানে অনেকগুলো শব্দ দেওয়া হয়। তার মধ্য থেকে প্রাণীদের নাম নির্বাচন করতে হয়। নিদিষ্ট সময়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রাণীর নাম যারা বের করতে পারে তারাই বিজয়ী।
এছাড়াও এদিন বন্যপ্রাণী সম্পর্কিত প্রেজেন্টেশন, র‍্যালী ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়।

চবি প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বার্ড ক্লাব ছাড়াও এ অনুষ্ঠানের সহ-আয়োজক হিসেবে ছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ সংসদ, বিচ্ছু সংগঠন, ভেনম রিসার্চ সেন্টার। অনুষ্ঠানের সহযোগিতায় ছিল চট্টগ্রাম বার্ড ক্লাব, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব।

প্রসঙ্গত, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের উদ্যোগে ২০১৪ সালে চবিতে প্রথমবারের মতো উৎযাপন করা হয় বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস। এরপর থেকে দিবসটি প্রতিবছর পালন করে আসছে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।