চবিতে রাতে জ্বলে না সড়কবাতি, নিরাপত্তা ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ১ নম্বর গেইট-স্মরণ চত্বর (জিরো পয়েন্ট) সড়কটি প্রায় সোয়া দুই কিলোমিটারের। রাস্তায় নির্দিষ্ট দুরত্ব পর পর রয়েছে সড়কবাতির ব্যবস্থা। কিন্তু বাতির ব্যবস্থা থাকলেও দীর্ঘদিন জ্বলছে না বাতিগুলো। যার ফলে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

তেমনি একজন ভুক্তভোগী বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রী হুমাইরা তাজরীন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ১ নম্বর গেইটে চাকরির প্রস্তুতি কোচিং করতে যাই নিয়মিত। ক্যাম্পাসে ফিরতে সন্ধ্যা নামে। আর প্রধান সড়কটি থাকে আলোশূন্য। যার কারণে এই সড়কে সন্ধ্যার পর হাঁটা ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ নারী দেখলে বখাটে ছাড়াও অপ্রকৃতিস্থ লোক পিছু নেয়।

এই পরিস্থিতিতে রাতের অন্ধকারে ছিনতাইসহ যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে রাতের বেলায় অন্ধকারে চলাচল করাটা নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন তারা। এমতাবস্থায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে জরুরীভিত্তিতে সড়ক বাতিগুলোর সংস্কার করার দাবি তাদের।

শিক্ষার্থীদের একটা অংশ শহর থেকে ক্যাম্পাসে যাতায়াতের জন্য শাটল ট্রেন ব্যবহার করলেও একটি বড় অংশ জিরো পয়েন্ট-এক নম্বর গেইট রোড ব্যাবহার করে যাতায়াত করেন। যাদের মধ্যে এক নম্বর গেইট, ফতেহপুর, হাটহাজারি ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বিভিন্ন মেস ও বাসায় বসবাসরত শিক্ষার্থীরা উল্লেখযোগ্য।

আবাসিক হল এবং ক্যাম্পাসের আশপাশে বিভিন্ন কটেজ ও মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা টিউশনসহ নানা প্রয়োজনে হাটহাজারি, ফতেপুর ও ততসংলগ্ন এলাকায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে এই সড়ক ব্যবহার করেন। এছাড়াও শাটল ট্রেনের শিডিউলের বাইরে শহরে যাতায়াত করার জন্য অবধারিতভাবেই এই রোডটি ব্যাবহার করতে হয়। ফলে রাতের বেলায় বাতি না জ্বলার কারণে সৃষ্টি হয়েছে নিরাপত্তা ঝুঁকি।

শুধু এই সড়কই নয়, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায়ও আলোক স্বল্পতা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাটা পাহাড় সড়কের মাঝখানে অবস্থিত সোডিয়াম লাইটটি দীর্ঘদিন নষ্ট। এখনো তা সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি প্রশাসন।

অপর এক শিক্ষার্থী রোকন উজ্জামান বলেন, আমাদের প্রায় সময়ই ১ নম্বর সড়কটি ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সড়কের পাশের বাতিগুলো নষ্ট থাকায় রাতের বেলা চলাচল করার ক্ষেত্রে একটি নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। রাতের অন্ধকারে যেকোনো সময় ছিনতাইসহ নানা অঘটন ঘটতে পারে৷ তাই বাতিগুলো সংস্কার করার ক্ষেত্রে অতিসত্বর প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) শহিদুল ইসলাম চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত। গত কয়েক মাস ধরে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় তার চুরির ঘটনা ঘটেছে। আমরা প্রথমে ক্যাম্পাসের বৈদ্যুতিক সংযোগগুলোর ক্ষেত্রে তামার তার ব্যবহার করেছিলাম। তামার তারগুলো দামী হওয়াতে একটি চক্র ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে তার চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। যার ফলে বিভিন্ন জায়গায় লাইটিং সংকট তৈরি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা তামার তারের পরিবর্তে এলুমিনিয়ামের তার দিয়ে সংস্কার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে লাইটিং সংকটটি সমাধানের চেষ্টা করব।

এফএম

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।