চবির চারুকলার বিবর্ণ রূপ, আয়োজন হবেনা বর্ষবরণ

প্রতিবছর এই সময়ে ব্যস্ত সময় পার করতেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা। বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে যাবতীয় আয়োজনে লেগে পড়তেন তারা। অথচ তার সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দেখা গেছে চবি চারুকলা ইন্সটিটিউট প্রাঙ্গনে। বাংলা নতুন বছরের আগমনে বাকি আছে মাত্র ৫ দিন। অথচ চবির চারুকলায় নেই কোনো আয়োজন, নেই কোনো ব্যস্ততা। চারিদিকে বিরাজ করছে সুনসান নিরবতা।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর সংস্কারকাজ চলমান থাকায় বর্তমানে বন্ধ রয়েছে চারুকলা ইন্সটিটিউট। যার ফলে শিক্ষার্থীরা বর্ষবরণের কোনো উদ্যোগ নিতে পারেননি। নববর্ষের প্রথম দিনেও সুনসান নিরবতা বিরাজ করবে চারুকলা চত্বরে। হবে না মঙ্গল শোভাযাত্রাও।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে মূল ক্যাম্পাসে নানা আয়োজন রাখলেও চারুকলায় কোনো আয়োজন রাখা হয়নি। শুক্রবার (৭ এপ্রিল) এসব তথ্য জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অরূপ বড়ুয়া।

তিনি বলেন, সংস্কার কাজের জন্য চারুকলা ইনস্টিটিউট বর্তমানে বন্ধ আছে। তাই চারুকলায় এ বছর বর্ষবরণের কোনো আয়োজন রাখা হয়নি। তবে নববর্ষকে বরণ করে নেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে আমরা বিভিন্ন আয়োজন করব। ওইদিন ক্যাম্পাসে শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। এছাড়াও বিভিন্ন দেশীয় খেলাধুলার আয়োজন হবে।

এদিকে নববর্ষ উদযাপন করতে না পারায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতি বছর চারুকলার শিক্ষার্থীরা মঙ্গল শোভাযাত্রার ব্যানার ফেস্টুনসহ যাবতীয় উপকরণ তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসের আয়োজনের জন্য তা বিক্রি করেন। বিক্রিলব্ধ টাকা দিয়েই মূলত চারুকলায় বর্ষবরণের যাবতীয় আয়োজন করা হয়। কিন্তু এ বছর চারুকলা বন্ধ থাকায় তা আর করা হয়নি।
এ পরিস্থিতিতে চারুকলাকে ছাড়া নববর্ষের আয়োজন অনেকটাই বেমানান বলে মন্তব্য চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের।

চারুকলা ইন্সটিটিউটের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. শহীদ বলেন, চারুকলায় নববর্ষবরণ আয়োজনের জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ইন্সটিটিউট কর্তৃপক্ষের সাথে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেও কোনো সাড়া পাইনি। যার ফলে আমরা নববর্ষ উপলক্ষ্যে কোনো আয়োজন করতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নামমাত্র একটি আয়োজন করে কোনোরকম দায় সারবে বলে ধারণা করছি। এক্ষেত্রে আমাদের হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা ছাড়া আর কিছুই করার নেই।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২ নভেম্বর ২২ দফা দাবিতে ক্লাসবর্জন করে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলন শুরু করেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। পরে তা মূল ক্যাম্পাসে ফেরার এক দফা দাবিতে রূপ নেয়। চলমান আন্দোলনের মধ্যেই গত ২ ফেব্রুয়ারি সংস্কারকাজের জন্য চারুকলা ক্যাম্পাস ও হোস্টেল এক মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর আরও দুই দফায় বাড়ানো হয় চারুকলা বন্ধের মেয়াদ, যা এখনও বন্ধ রয়েছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।