জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, নিরাপত্তাহীনতা—পাঁচ বছরে নিউইয়র্ক ছাড়বে ২৭ ভাগ মানুষ

নিউইয়র্কের প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ এই স্টেট ছেড়ে চলে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে শতকরা ২৭ ভাগ নিউইয়র্কার নিউইয়র্ক ত্যাগ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মূলত জীবনযাত্রার ব্যয়ভার বহনে অক্ষমতা, রাজনীতি, অপরাধ ও নিরাপত্তাহীনতার কারণেই তারা এই রাজ্য ত্যাগ করছে বলে সিয়েনা কলেজ রিসার্স ইনস্টিটিউট পরিচালিত জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে। সম্প্রতি এসব বিষয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নিউইয়র্ক পোস্ট।

সিয়েনার জরিপে নিউইয়র্কে বাসস্থানের সমস্যাকেও গুরুত্বের সাথে তুলে ধরা হয়েছে। ম্যানহাটানের বাইরে ব্রংকস, কুইন্স, ব্রুকলিন কিংবা স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে তুলনামূলকভাবে সস্তায় বাসা ভাড়া পাওয়া যেত। কিন্তু সেগুলিও এখন নাগালের বাইরে বলে জরিপে মন্তব্য করা হয়েছে।

কুইন্সের এস্টোরিয়ায় ৩ বেডরুমের একটি সাদামাটা বাসার ভাড়া ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার ডলার। ব্রংকসে এ ধরনের বাসা ভাড়া ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ডলার। ইঁদুর-ছারপোকার উপদ্রব এবং বাড়ির মালিকদের বিবেচনাবোধহীন আচরণও মানুষকে নিউইয়র্ক ছাড়তে প্ররোচিত করছে। নিউইয়র্কেও স্কুলগুলোর মান অন্যান্য স্টেটের কাছাকাছিও নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সন্তানের কথা চিন্তা করেও অনেকে ছাড়ছেন নিউইয়র্ক। সিয়েনা পোল এজেন্টের সাথে আলপকালে নিউইয়র্ক থেকে ফ্লোরিডায় পাড়ি জমানো এলেক্স ও তার ফিঁয়াসে বলেছেন, নিউইয়র্কের ট্যাক্স ‘কিলিং আস’। ফ্লোরিডায় তা অর্ধেকের চেয়েও কম। বিশাল বাড়ি, পুল, ব্যাকইয়ার্ড. পার্কিং, গ্যারেজ, সুন্দরভাবে বসবাসের সবই আছে এখানে। আর নিউইয়র্কে শুধু নাই নাই। পার্কিং এর জায়গা নেই। কুকুরকে হাঁটানোর রাস্তা নেই।

খেলাধুলার পার্ক নেই। আছে শুধু ক্রাইম। রাস্তায় বেরুলেই শংকায় থাকতে হয়। ম্যানহাটানের আপার ইস্ট সাইডের এন্ডারসন কন্ডোতে তারা থাকতেন। কন্ডো ভাড়াসহ তাদের মাসে খরচ হতো ১০হাজার ডলার। সেখান থেকে নিউ অরলিন্সে মুভ করেছেন ২০২২ সালে। তাদের মাসিক খরচ এখন মাত্র ২২০০ ডলার। এমনই আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে এসেছে সিয়েনা জরিপে।

ইতোমধ্যে অত্যধিক ট্যাক্স ও অফিস ভাড়ার কারণে করপোরেট অনেক অফিস নিউইয়র্ক সিটি ত্যাগ করেছে। গত ২ বছরে ৪ লাখ নিউইয়র্কার স্টেট ছেড়ে চলে গেছে। কমেছে কংগ্রেশনাল আসন। এভাবে কমতে থাকলে নিউইয়র্কে রাজনৈতিক গুরুত্বও হারাবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।