জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা পেলেন চট্টগ্রামের ১০ গুণিজন

শিল্প-সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ জেলা শিল্পকলা একাডেমির উদ্যেগে চট্টগ্রামের ১০ গুণি ব্যক্তিকে সন্মাননা প্রদান করা হয়েছে। সম্মাননা হিসেবে প্রত্যককে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃক সনদ, নগদ ২০ হাজার টাকা, উত্তরীয় ও সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) বিকেল ৫টায় একাডেমির অনিরুদ্ধ মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়। জেলা শিল্পকলা একাডেমি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা-২০২১ প্রাপ্ত গুণি ব্যক্তিরা হচ্ছেন—নাট্যকলায় প্রদীপ দেওয়ানজী, কণ্ঠ সংগীতে কল্পনা লালা, নৃত্যকলায় কৃষ্ণা বিশ্বাস, চলচ্চিত্রে নাজিমুদ্দিন শ্যামল ও আবৃত্তিতে মিলি চৌধুরী এবং সম্মাননা-২০২২ প্রাপ্ত গুণি ব্যক্তিরা হচ্ছেন—লোক সংস্কৃতিতে কল্পতরু ভট্টাচার্য, ফটোগ্রাফিতে দেব প্রসাদ দাস দেবু, চারুকলায় সৌমেন দাশ, কণ্ঠ সংগীতে মো. মোস্তফা কামাল ও নাট্যকলায় সনজীব বড়ুয়া।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। বিশেষ অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যজন ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিষদ সদস্য আহমেদ ইকবাল হায়দার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মো. আবু রায়হান দোলন ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাট্যজন সাইফুল আলম বাবু।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার মো. মোসলেম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে সম্মাননা প্রাপ্ত গুণি ব্যক্তিরা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর বলেন, প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সংস্কৃতি কর্মীরা সম্পৃক্ত। সংস্কৃতির প্রথম প্রধান উপকরণ ভাষা। ভাষার মাধ্যমে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডকে সুসংগঠিত করা হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা ও বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী সংস্কৃতি বান্ধব। সংস্কৃতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে পৃষ্টপোষকতার পাশাপশি সরকার বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে গুণীজনদেরকেও সম্মাননা জানানোর সংস্কৃতি চালু করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রতি বছর জেলা পর্যায়ে শিল্প ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ‘জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা’ প্রদান সরকারের সেই কার্যক্রমকে তরান্বিত করার ক্ষেত্রে একটি অনন্য উদ্যোগ। সরকারের অর্থ বিভাগ থেকে শিল্পকলার প্রশিক্ষকদের সম্মানী ভাতা ৮ হাজার টাকা ও প্রত্যেক উপজেলায় শিল্পকলা একাডেমি স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, গুণিজনদের সম্মাননা জানানো তাঁদের কাজের মূল্যায়নের পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকেও অনুপ্রেরণা যোগাবে যা চট্টগ্রামের শিল্প-সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশকে আরো বেগবান করবে। আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে নতুন প্রজন্মকে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সংস্কৃতিকে হৃদয়ে ধারণ করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার সম্মাননা প্রাপ্ত সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে তাঁর বক্তব্যে বলেন, সকল অপসংস্কৃতিকে বর্জন করার মধ্য দিয়ে আমাদের যে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে তাকে ধারণ ও লালন করতে হবে। তিনি শিল্প ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে ১০ গুণিজনকে ‘জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা’ প্রদান করায় শিল্পকলা একাডেমিকে ধন্যবাদ জানান।

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিকসহ প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকান্ডে চট্টগ্রাম এগিয়ে। খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডকে তৃনমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় চট্টগ্রামের জেলার ১৫ উপজেলার ১৯১টি ইউনিয়নে প্রত্যেকটিতে একটি করে খেলার মাঠের পাশাপাশি বিনোদনের জন্য কালচারাল সেন্টার তৈরীর কাজ শুরু হয়েছে। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বহিী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

সবশেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ দলীয় নৃত্য ও দলীয় সংগীত পরিবেশিত হয়।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।