টোলের আওতায় আসছে ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোড

ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোডকে অবশেষে টোলের আওতায় আনা হচ্ছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে হস্তান্তর না করে নিজেরাই রক্ষণাবেক্ষণ করবে। আর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়, লাইটিংয়ের খরচ এবং পাহাড় ব্যবস্থাপনার ব্যয় মেটাতে রাস্তাটিকে টোলের আওতায় আনা হচ্ছে।

তবে শহর থেকে শুধুমাত্র রাস্তাটিতে ঘুরতে গেলে কোনো টোল পরিশোধ করতে হবে না। যারা রাস্তাটি পার হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাতায়াত করবেন তাদেরকে নির্দিষ্ট হারে টোল পরিশোধ করতে হবে। টোলের হার এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি বলে উল্লেখ করে সিডিএ জানিয়েছে, আমরা ব্যবসা করতে নয়, খরচের সংস্থান করতে টোল নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে তা যাতে মানুষের সহনীয় থাকে সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে টোল আদায়ের ব্যাপারটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলেও সিডিএ নিশ্চিত করেছে।

নগরীর বায়েজিদ রোড থেকে ফৌজদারহাটে ঢাকা চট্টগ্রামের সাথে যুক্ত করে একটি রাস্তা নির্মাণ করা হয়। ফৌজদারহাট বায়েজিদ লিংক রোড নামের রাস্তাটি মূলত শহরের আউটার রিং রোডের অংশ। প্রায় ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাটির নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ না হলেও গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে যান চলাচল করছে। রাস্তাটি নির্মাণের সময় সিডিএ ১৬টি পাহাড় কেটেছিল।

এখন ওই পাহাড় কাটার বিষয়টি নতুন করে যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পাহাড় ব্যবস্থাপনার জন্যও বেশ মোটা অংকের অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। রাস্তাটিতে বৈদ্যুতিক বাতি লাগানোসহ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের কাজ যুক্ত হয়েছে। এসব খরচ যোগানোর মতো অর্থ সিডিএ নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করবে না। আবার মন্ত্রণালয়ও এই বাড়তি খরচের টাকার যোগান দেবে না। রাস্তাটির গুরুত্ব বিবেচনা করে সিডিএ রাস্তাটি সিটি কর্পোরেশনকেও হস্তান্তর করছে না। এতে করে রাস্তাটি রক্ষণাবেক্ষণসহ সার্বিক খরচের যোগান দিতে সিডিএ টোল আদায়ের প্রস্তাব করলে মন্ত্রণালয় থেকে সেটি অনুমোদন করা হয়। এখন সিডিএ কত বছর ধরে বা কত টাকা করে টোল নেবে তা নির্ধারণ করার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত একনেকের সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। ওই সময় প্রকল্প ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৭২ কোটি টাকা। পরবর্তীতে দফায় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ এবং ব্যয় বেড়েছে। বিশেষ করে এশিয়ান উইম্যান ইউনির্ভাসিটির সাথে রাস্তা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় পুরো প্রকল্পটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছিল। পরবর্তীতে আগে নির্মিত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা এশিয়ান উইম্যান ইউনির্ভাসিটিকে হস্তান্তর করে নতুন করে লুপ রোড নির্মাণসহ ডিজাইন পাল্টে রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়।

এতে প্রকল্পের ব্যয় ৩২০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। পরে আবারো প্রকল্প সংশোধন করে প্রায় ৩৩ কোটি টাকার খরচ বেড়ে যায়। এতে প্রকল্প ব্যয় দাঁড়ায় ৩৫৩ কোটি টাকায়। কিন্তু বাড়তি ৩৩ কোটি টাকা সরকারের কাছ থেকে না পেয়ে টোল আদায়ের মাধ্যমে উক্ত টাকার সংস্থান করতে যাচ্ছে সিডিএ। এরসাথে রাস্তাটির দুইপাশে ইতোপূর্বে কাটা পাহাড় স্থিতিশীল রাখা, রাতের বেলায় রাস্তা আলোকিত রাখাসহ রক্ষণাবেক্ষণ খরচ টোলের মাধ্যমে মেটানোর উদ্যোগ নিয়েছে সিডিএ।

সূত্র জানায়, আগামী মাসে দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদার নিয়োগ করা হবে, যারা রাস্তাটি থেকে টোল আদায় করবে। তবে টোলের হার সিডিএ নির্ধারণ করে দেবে।

সিডিএর চিফ ইঞ্জিনিয়ার কাজী হাসান বিন শামস বলেন, টোল আদায় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে তা সাধারণ মানুষের জন্য সহনীয় রাখা হবে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।