থামছে না আকাশের বৃদ্ধা মায়ের কান্না

অভাবের সংসারে ছেলের হত্যার খবর শোনার পর থেকে বৃদ্ধা হোসনে আরা (৭০) ছেলের শোকে পাগল প্রায়। থামছেনা তার কান্না।

এক ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে নিহত শহিদুল ইসলাম আকাশ (৩২) সবার ছোট। আকাশের পিতা নুরুল ইসলাম অনেক কষ্ট করে দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ধারদেনা করে ফার্নিচারের দোকান দিয়েছেন।

এরপরে একমাত্র ছেলেকে বিয়ে করান। তাদের ঘরে আসে জান্নাত আনামিকা নামে ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তান। সন্তান জান্নাতের বাবা ডাক শোনার আগে নির্মামভাবে কুপিয়ে শহিদুল ইসলাম আকাশকে হত্যা করেছে উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের সন্ত্রাসীরা।

হিঙ্গুলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চিনকির হাটে সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে নিজ ফার্নিচার দোকানে আকাশের ওপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় সন্ত্রাসীরা আকাশকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে।

পরে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও আকাশের পরিচিতরা প্রথমে আকাশকে মস্তান নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন।

চমেক হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত ৯টার দিকে আকাশ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের চিনকিরহাট গ্রামের মানত মাঝি বাড়িতে স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। নিহত আকাশের মা বৃদ্ধা হোসনে আরা ছেলের শোকে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ির উঠানে নাতিনকে বুঁকি জড়িয়ে মূর্ছা যাচ্ছেন।

বাবা নুরুল ইসলামকে স্বজনরা নানাভাবে সান্তানা দিয়েও কান্না থামাতে পারছেন না প্রতিবেশীরা। আকাশের স্ত্রী রাশেদা আক্তার ঘরের বারান্দায় ডুকরে ডুকরে কাঁদছিলেন।

হিঙ্গুলী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। পূর্বশত্রুতার জের ধরে সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আধিপত্য নিয়ে হামলা করে শহিদুল ইসলাম আকাশের ওপর।

২০০০ ও ২০১৮ সালেও তার ওপর হামলা হয়েছিল। এবার তাকে (আকাশ) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে।
জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুর হোসেন মামুন বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। এ খুনের ঘটনায় তদন্তের পাশাপাশি জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।