দেশকে তামাকমুক্ত করতে ৪০ এমপির ‘কক্সবাজার ঘোষণাপত্র’

২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করতে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনসহ ১৬ দফার ‘কক্সবাজার ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা করেছেন ৪০ জন সংসদ সদস্য।

তিন দিনব্যাপী ‘২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন’ শীর্ষক সংসদ সদস্য কনফারেন্সের শেষ দিনে শুক্রবার কক্সবাজারের সি পার্ল বিচ রিসোর্ট হোটেলে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে সংসদ সদস্যরা এই ঘোষণাপত্র প্রদান করেন।

‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিং’ এর আয়োজনে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন ও ক্যাম্পেইন ফর ট্যোবাকো-ফ্রি কিডস বাংলাদেশ এর সহায়তায় অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে করণীয় অনুসন্ধান ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ।

সংবাদ সম্মেলনে সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণাপত্রটি পাঠ করেন পার্লামেন্টারি ফোরামের সভাপতি সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত।

এ সময় সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য আ.স.ম ফিরোজ বলেন, ‘৪০ জন সংসদ সদস্য শুধুমাত্র তামাকের বিরুদ্ধে সম্মেলন করছে, এটা কেবল বাংলাদেশই নয়, সারা বিশ্বেই বিরল। আমরা সচেতনভাবে একমত হয়ে এই কক্সবাজার ঘোষণাপত্রে ১৬টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেছি। আমরা চাই, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নে এর সবগুলোই বাস্তবায়ন করা হোক।’

সংসদ সদস্য শিরীন আখতার বলেন, ‘তামাকের বিরুদ্ধে আমাদের এই লড়াই অব্যাহত থাকবে। আমরা বিভিন্ন প্রস্তাবনা পেশ করেছি আজকের ঘোষণাপত্রে। বিশেষ করে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান বন্ধ করা এবং সিগারেটের সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করাটা খুবই জরুরি।’

‘কক্সবাজার ঘোষণাপত্রে’ প্রস্তাবিত ১৬টি প্রস্তাবনায় তামাক নিয়ন্ত্রণ নীতিতে বাংলাদেশকে বৈশ্বিকভাবে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক ট্রান্সপোর্টকে শতভাগ ধূমপানমুক্ত করা, ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ বাতিল করা, তামাকপণ্যের বিক্রয়স্থলে পণ্য প্রদর্শন বন্ধ করা, খুচরা সিগারেট বিক্রি বন্ধ করাসহ তামাক কোম্পানিগুলির সমস্ত কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়।

এছাড়াও তামাকপণ্যের মোড়কে স্বাস্ত্য সতর্কবার্তা ৯০% পর্যন্ত বৃদ্ধি করা, ই-সিগারেটসহ সকল হিটেড ট্যোবাকোর আমদানি, রপ্তানি, উত্পাদন, বিতরণ, বিক্রয় এবং বাজারজাতকরণের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা ইত্যাদি।

উল্লেখ্য, ৩ দিনব্যাপী এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সর্বমোট ৪০ জন সংসদ সদস্য এবং ভার্চুয়ালি অংশ নেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। সম্মেলনের প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে মোট তিনটি সেশনে সভাপতিত্ব করেন পার্লামেন্টারি ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত, অধ্যাপক ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক, আ.স.ম ফিরোজ।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।