দেশে ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস আজ

বর্তমানে বিশ্বের ৫৪ কোটিরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। বাংলাদেশে এ সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ। যদিও আক্রান্তদের অর্ধেকেরও বেশি জানেন না নিজের রোগটি সম্পর্কে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিরোধ ও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণযোগ্য হলেও শুধু অজ্ঞতার কারণে ডায়াবেটিসজনিত জটিলতায় বাড়ছে অন্ধত্ব, হৃদরোগ, কিডনি রোগ, স্ট্রোক ও পঙ্গুত্বের মতো জটিল রোগের ঝুঁকি। জীবনের যে কোনো সময়ে, যে কোনো বয়সী মানুষই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন জানিয়ে, মাঝে মাঝে রক্তের সুগার পরীক্ষার পাশাপাশি নিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপনের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের (আইডিএফ) তথ্য মতে, বর্তমানে বিশ্বের ৫৪ কোটিরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। বাংলাদেশে এ সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ। আর বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ২৬ জন নারী গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন যাদের ৬৫ শতাংশই পরবর্তীতে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে পরিণত হয়।

ভয়ঙ্কর তথ্য হলো অনেকেই নিজের আক্রান্তের খবরটি যেমন জানেন না, তেমনি আক্রান্তদের অনেকেই মেনে চলেন না সঠিক নিয়ম কানুন। শরীরে ইনসুলিন নামক হরমোনের অভাব হলে রক্তের গ্লুকোজ দেহের বিভিন্ন কোষে ঠিকমতো ঢুকতে পারে না। ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিকেই বলে ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস একবার হলে সারাজীবন বহন করতে হয়।

বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, উপসর্গের জন্য কারও দেরি করা ঠিক হবে না। একটা বয়সের পরে সেটি পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চলতে হবে।

বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন বলেন, ডায়াবেটিস হলো সকল রোগের জননী। এটি হলে অন্ধত্ব, হৃদরোগ, কিডনি রোগ, স্ট্রোক ও পঙ্গুত্বের মতো সব রোগ দেহে বাসা বাঁধবে। তাই দেরি না করে যে কোনো বয়সে যে কোনো সময় নিজের রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ জেনে নিন। পরীক্ষা করান, ভালো থাকুন।

এদিকে রোববার (১৪ নভেম্বর) পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি পালিত হচ্ছে। বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘আগামীতে নিজেকে সুরক্ষায় ডায়াবেটিসকে জানুন’।

বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে ডায়াবেটিস সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি করাই বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের প্রধান লক্ষ্য। ১৯৯১ সালে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন ১৪ নভেম্বর তারিখটিকে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। তবে, ২০০৭ থেকে পৃথিবীজুড়ে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হচ্ছে জাতিসংঘের স্বীকৃত একটি দিবস হিসেবে।

আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে এ দিবসটির স্বীকৃতি লাভ করার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির অনুরোধে বাংলাদেশ সরকার ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালনের জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব করে।

জাতিসংঘে ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর এ প্রস্তাব সর্বসম্মতিতে গৃহীত হয়। এর ফলে গত ১৪ বছর ধরে জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রে প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর জাতিসংঘের একটি দিবস হিসেবে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হচ্ছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।