নুরজাহান গ্রুপের পরিচালক টিপু সুলতান ধরা খেল ঢাকায়

বিভিন্ন ব্যাংক পাবে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা

ঋণখেলাপি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভূক্ত আসামি চট্টগ্রামের নুরজাহান গ্রুপের পরিচালক টিপু সুলতানকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে শুক্রবার আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকার গুলশানস্থ নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে খুলশী থানার একটি টিম।টিপু সুলতান খুলশী থানার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে।

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নুরজাহান গ্রুপের পরিচালক টিপু সুলতান বিভিন্ন মামলায় সাজা হওয়ার পরস ঢাকায় আত্মগোপন করেন। পরোয়ানা থাকলেও এতদিন পর্যন্ত তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জানা গেছে, টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে ২১টি ঋণ খেলাপির মামলার পরোয়ানা রয়েছে। এরমধ্যে ১৮টিতেই তার বিরুদ্ধে সাজার আদেশ হয়েছে। খুলশী থানায় ৭টি, পাঁচলাইশে ৯টি এবং কোতোয়ালী থানায় ২টি সাজার আদেশ আছে। এছাড়া আদালতে বিচারাধীন আরও তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে।

এছাড়া নুরজাহান গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের নামে এমডি জহির আহমদ রতনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কমপক্ষে ১৫টি মামলা আছে। এ কারণে আদালত তার বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। তাছাড়া বিভিন্ন মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলেও রতনের কোনো হদিস পায়নি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা।

এর আগে,গত ১৩ সেপ্টেম্বর নুরজাহান গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর জহির আহমেদ রতন ও তার ভাই টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে প্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালত। সাউথ ইস্ট ব্যাংকের ২৬৮ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পরিশোধ না করায় তাদের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সাউথ ইস্ট ব্যাংক ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নুরজাহান গ্রুপ এবং তার অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের নামে অন্তত চার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন তারা। রতন ও টিপুর সাথে তাদের আরেক ভাই ফরহাদ মনোয়ারের নামেও রয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। আর মামলা রয়েছে অন্তত দেড় ডজন।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের বাসিন্দা এই তিন ভাই-ই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় স্থায়ী ঠিকানা করে নিয়েছেন আগেই। ঋণের বিপরীতে ব্যাংকে রাখা বন্ধকি সম্পত্তির মূল্যও এতো কম যে, তা দিয়ে ব্যাংকের খেলাপি ঋণের এক-দশমাংশও আদায় করা সম্ভব নয়।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।