নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি : দ্বিতীয় দিনেও বন্দরের বহির্নোঙরে বন্ধ পণ্য খালাস

নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিনেও চট্টগ্রাম বন্দরে মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। এমনকি বন্দরের পাশে থাকা ১৭টি ঘাটে লাইটার জাহাজ থেকে পণ্য ওঠা-নামার কাজও বন্ধ রয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের শ্রমিক নেতারা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। শনিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে এখন পর্যন্ত কোনো পণ্য খালাস বা ওঠা-নামার কোনো কাজই করেননি তারা।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, রোববার বন্দরের বহির্নোঙরে বিভিন্ন পণ্যবাহী ২২টি জাহাজ থেকে পণ্য খালাস চলছিল। সেগুলোর সঙ্গে সোমবার কয়েকটি জাহাজ পণ্য খালাসের জন্য প্রস্তুতি নিলেও শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে তা বন্ধ রয়েছে।

শ্রমিকদের ১০ দফা দাবি হলো নৌ শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদানসহ সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, খাদ্য ও সমুদ্র ভাতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা, দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা, চট্টগ্রাম থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহে দেশের স্বার্থবিরোধী অপরিণামদর্শী প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা, বালুবাহী বাল্কহেড ও রাতে ড্রেজার চলাচলের উপরে ঢালাও নিষেধাজ্ঞা শিথিল, নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ, ভারতগামী শ্রমিকদের লান্ডিং পাস প্রদানসহ ভারতীয় সীমানায় সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করা, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করে সকল লাইটারিং জাহাজকে সিরিয়াল মোতাবেক চলাচলে বাধ্য করা, চরপাড়া ঘাটে ইজারা বাতিল ও নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের অনিয়ম বন্ধ করা।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে বন্দরের ভেতরে অপারেশনাল কার্যক্রম, কন্টেইনার লোড-আনলোড, বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে বহির্নোঙর এবং কর্ণফুলী নদীর বিভিন্ন ঘাটে লাইটারেজ জাহাজে পণ্য উঠানামা বন্ধ রয়েছে।

এদিকে, নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিনে যাত্রী ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। মালবাহী ও যাত্রীবাহী সব ধরনের নৌযান শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকাসহ ১০ দফা দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) ভোরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর সদরঘাটসহ দেশের সবকটি নৌবন্দরে শ্রমিকরা কর্মবিরতির অংশ হিসেবে কাজে যোগদান থেকে বিরত রয়েছেন।

যাত্রীরা জানান, আমরা জানতাম না যে, ধর্মঘট চলছে। ঘাটে এসে দেখি কোনো লঞ্চ চলছে না, তাই বাধ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।