‘পরিবারের শিশু অটিস্ট হলেই মাকে দায়ী করার প্রবণতার কোনো ভিত্তি নেই’

প্রখ্যাত শিশুরোগ ও অটিজম বিশেষজ্ঞ ডা. বাসনা মুহুরী বলেছেন, চিকিৎসাশাস্ত্রে অটিজমের কোনো কারণ এখনো জানা যায়নি। তাই কোনো পরিবারের শিশু অটিস্ট হলেই মাকে দায়ী করার প্রবণতার কোনো ভিত্তি নেই। সৃষ্টিকর্তা তার সৃষ্টি জগতকে বৈচিত্র্যময় করে সাজিয়েছেন। সে জন্য জগৎ সংসারে কোনো মানুষের রং কালো, কারও আবার সাদা যেমন, ঠিক তেমনিভাবেই অটিস্ট আর প্রতিবন্ধিতাও সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিবৈচিত্র্যেরই অংশ।

চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘হেলথ এন্ড মেডিক্যাল’ এক্সপোর দ্বিতীয় দিন শুক্রবার (১১ নভেম্বর) ‘শিশুর বিকাশ ও প্রতিবন্ধিতার কারণ বিষয়ক’ সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

অটিস্ট শিশুর পরিবারকে সমাজে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখার যে মানসিকতা, তাদের একঘরে করে রাখার যে প্রবণতা তার বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, সবাই সচেতন হলে অটিস্ট আক্রান্ত শিশুকে সমাজের মূলধারায় সম্পৃক্ত করা সম্ভব।

‘পুষ্টি ও ওজন কমানো’ বিষয়ক পুষ্টিবিদ হাসিনা আকতার লিপি সেমিনারে বলেছেন, খাদ্য ও পুষ্টি সম্পর্কে সমাজের বেশিরভাগ মানুষই ভুল ধারণা নিয়ে থাকেন। তাই মানুষ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টরল বৃদ্ধি এবং লিভারের চর্বি জমার মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। সুস্থভাবে বাঁচতে হলে কখন কী খাওয়া উচিত, কী খাওয়া উচিত নয়-সে সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকতে হবে এবং সে অনুযায়ী জীবনযাপনের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

সেমিনার শেষে তাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন আয়োজক প্রতিষ্ঠান মাস্কস ম্যানেজমেন্টের প্রধান উপদেষ্টা, আমরা করবো জয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লেখক-সাংবাদিক শওকত বাঙালি।

প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও ভাইস চেয়ারম্যান আবুল মনসুরের সঞ্চালনায় সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন সুপ্রভাত বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সম্পাদক কাঞ্চন মহাজন, তরুণ শিল্পোদ্যাক্তা ও শিক্ষাবিদ মো. সাজ্জাদ উদ্দিন, উডইঞ্জিনিয়ার শওকত জামান, জাহেদ নেওয়াজ জহির, ওয়াহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

এইদিকে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মেলায় ছিল উপচে পড়া ভিড়। আয়োজকরা জানিয়েছেন, ৭০টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের অংশগ্রহণে ‘সুস্বাস্থ্যের জন্যে চাই সচেতনতা’ বার্তা নিয়ে স্বনামধন্য ও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণের সমন্বয়ে স্বাস্থ্যবিষয়ক সেমিনার ও বিনামূল্যে পরামর্শসহ ৩ দিনব্যাপী এক্সপোতে রয়েছে ফ্রি ডায়াবেটিস চেকআপ, ফ্রি রক্ত গ্রুপ নির্ণয়, ফ্রি চক্ষু পরীক্ষা, ফ্রি স্বাস্থ্য পরামর্শ ও বিষয়ভিত্তিক সেমিনার। শনিবার রাত ৮টা পর্যন্তে মেলা চলবে।

‘বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক সম্মাননা’পাবেন ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান

এদিকে শনিবার (১২ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় সমাপনী আয়োজনে ১০ জনকে দেওয়া হবে বীর মুক্তিযোদ্ধা একে ফজলুল হক চেয়ারম্যান বিশেষ সম্মাননা। সম্মাননার জন্য মনোনীতরা হলেন- চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডা. রবিউল হোসেন, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ক্যান্সার ওয়ার্ডের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক বিশিষ্ট শিল্পপতি ও পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মো. মিজানুর রহমান ও অধ্যক্ষ সাফিয়া গাজী রহমান, চট্টগ্রাম ফিল্ড হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া, ৫০ বছরের সফল প্রতিষ্ঠান সন্ধানী, নিজের বেতনের টাকায় গরিবের ওষুধ সামগ্রী বিতরণকারী মোহাম্মদ নেছার, সেবা ফাউন্ডেশনের অধিকর্তা মানবিক পুলিশ শওকত হোসাইন, বেওয়ারিশ মানুষদের প্রতিনিয়ত সেবাদানকারী মঞ্জুর হোসেন, করোনাকালীন ও সর্বশেষ বিএম ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতদের সহায়তায় এগিয়ে আসা গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশ এবং করোনাকালীন সম্মুখসারির সংগঠন আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর এবং নিউক্লিয়াস ও স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, রাউজান থানা আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, ১১ নম্বর পশ্চিম গুজরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং যুদ্ধকালীন মুজিব বাহিনী প্রধান, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, রাউজানে সমবায় আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা বীর মুক্তিযোদ্ধা একে ফজলুল হক চেয়ারম্যান স্মরণে এ বিশেষ সম্মাননা স্মারক দেওয়া হবে।

এর আগে সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম ডায়াবেটিস হসপিটালের পরিচালনায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক পরামর্শ, সকাল ১১টায় খ্যাতিমান লেখক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আবু সাঈদ শীমুল-এর পরিচালনায় শিশুরোগ ও প্রতিকার বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।