পাঁচগুণ ব্যয় বাড়িয়ে পদ্মা সেতুর আদলে কালুরঘাট সেতুর প্রস্তাব

স্বাধীন বাংলাদেশে এ যাবৎ সর্ব বৃহৎ নির্মাণ প্রকল্প পদ্মা সেতুর আদলে কালুরঘাট সেতু নির্মাণের প্রাথমিক নকশা তৈরি করেছে কোরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান। প্রস্তাবিত নকশা অনুযায়ী, সেতুর ওপরে থাকবে দুই লেইনের সড়ক এবং নিচে থাকবে দুই লেইনের রেললাইন, স্পেন বসবে ১০০ মিটার। নতুন প্রস্তাবে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা। যা আগে প্রস্তাবিত সেতুর ব্যয়ের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি।

বুধবার (৬ জুলাই) বেলা ১১টায় সিআরবির সম্মেলন কক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সেতুর সম্ভাব্য দাতা সংস্থা কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত এক্সিম ব্যাংকের নিয়োগ করা প্রতিষ্ঠান ইওসিন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন বা দোহা প্রাথমিক সমীক্ষা শেষে সেতু নির্মাণের স্থান, নকশা, ব্যয় ও নির্মাণকাল নিয়ে প্রাথমিক প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে।

এতে সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন ও কালুরঘাট সেতু নির্মাণ সংক্রান্ত ফোকাল পারসন পূর্ব রেলের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) মো. গোলাম মোস্তফাসহ রেলের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

সমীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান দোহা’র কর্মকর্তারা পাওয়ার পয়েন্টে সেতুর প্রস্তাবিত নকশা উপস্থাপন করেন। নকশায় দেখা যায়, ব্রিজের উপরের ডেকে থাকবে সড়ক, নিচের ডেকে থাকবে রেললাইন। রেল ডাবল লাইন হবে, সড়কও ডাবল লাইন। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা। সেতুটির ৭৮০ মিটারের উপরে চলবে গাড়ি আর নিচে ট্রেন। প্রাথমিকভাবে ব্রিজের দৈর্ঘ্য ধরা হয়েছে ৭৮০ মিটার, বায়াডাক্ট ৫ দশমিক ৬২ মিটার। স্পেন হবে ১০০ মিটার। ব্রিজের উচ্চতা হবে ১২ দশমিক ২ মিটার।

পাঁচগুণ ব্যয় বাড়িয়ে পদ্মা সেতুর আদলে কালুরঘাট সেতুর প্রস্তাব 1

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর ওপর বিদ্যমান কালুরঘাট সেতু থেকে ৭০ মিটার উজানে অর্থাৎ উত্তরে নতুন সেতুটি নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবনা অনুযায়ী, সেতু নির্মাণের সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছে কাজ শুরুর সময় থেকে চার বছর। আর রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একনেকে অনুমোদন, দরপত্রসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে তারা সেতুর কাজ শুরু করতে পারবে। সেক্ষেত্রে সেতুটি নির্মাণ শেষ হতে বর্তমান সময় থেকে পাঁচ বছর অর্থাৎ ২০২৭ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে।

উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালে বৃটিশ শাসনামলে এ রেল সেতুটি নির্মিত হয়। ২০০১ সালে প্রথম এই সেতুটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলে বিকল্প হিসেবে শাহআমানত সেতু নির্মাণ করা হয়। ২০১১ সালেও চুয়েটের একদল গবেষক আরেকবার ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেন কালুরঘাট সেতুটিকে।

বয়সের ভারে ন্যুব্জ এ সেতু সেতুতে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। একটু ভারি গাড়ি চললেই থর থর কাঁপে এ সেতু। এরপরও এই সেতুর উপর দিয়ে ট্রেন যাচ্ছে দোহাজারী পর্যন্ত। কারণ নকশা ও অর্থায়নে জটিলতাসহ নানা কারণে নতুন কালুরঘাট সেতু নির্মাণ প্রকল্প বার বার পিছিয়েছে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।