পানিতে ডুবলো শিকলবাহা, ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ

বর্ষা আসলেই শিল্প কারখানার বিষাক্ত বর্জ্যের পানি ছেড়ে দেয় গ্রামের ওপর। কর্ণফুলী নদীর জোয়ারের পানির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিভিন্ন কারখানার বর্জ্যের পানিও চলে আসে এলাকায়। এই পানির কারণে বন্দি জীবনযাপন করতে হয় সাধারণ মানুষের। পানিতে ডুবে গেছে সড়কও, ছেলে-মেয়েরাও যেতে পারে না স্কুলে। এমন আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের বাসিন্দারা।

জানা গেছে, উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের কালারপুল সেতু থেকে ভেল্লাপাড়া সেতু পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার অংশে বেড়িবাঁধ না থাকায় ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা বর্ষাকালে জোয়ারের পানিতে দিনে রাতে দুইবার ডুবে যায়। এ সময় ভারী বর্ষণ, অপরিকল্পিত কারখানার পানি ও বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হলে এর প্রভাবে কর্ণফুলী নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পায়। এতে নদীর উপশাখা শিকলবাহা খাল হয়ে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে ইউনিয়নের রাস্তাঘাটে কোথাও কোথাও গলাসমান পানি হয়। এতে অন্তত কয়েক হাজার লোককে পানিবন্দী হয়ে পড়তে হয়। যার ফলে দৈনন্দিন কাজে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় এখানকার বাসিন্দাদের।

সরজমিনে দখা গেছে,গত কয়েকদিন ধরে পানিতে প্লাবিত হয়েছে শিকলবাহা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের নিচু এলাকা; ভেঙে গেছে সড়ক। এতে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষক, খামারী ও বিভিন্ন স্কুল, মাদরাসার শিক্ষার্থীরা।

এইদিকে অতিরিক্ত পানির কারণে উপজেলার স্কুল, মাদরাসার শিক্ষার্থীদের পাঠদানেও বিঘ্ন ঘটছে। শিক্ষার্থীদের পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে খাজা মঈনিয়া সূন্নীয়া মাদরাসা, শাহ অহিদিয়া মেমোরিয়াল স্কুল, আল মারকাজুল ইসলামী কিন্ডার গার্টেন, শিকলবাহা ছাবেরিয়া মাদরাসায় এবং মিয়াজির বাড়ি সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক পানিতে ডুবে ভোগান্তিতে পড়ছেন ইউনিয়নের হাজারো মানুষের।

এছাড়া পানিবন্দী হয়ে থাকায় জনজীবনে নেমে এসেছে অসহনীয় দুর্ভোগ। বড় ধরণের কোনো সমস্যা না হলেও এ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে রাস্তাঘাট ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নিচু জায়গা ও রাস্তায় পানি জমে গেছে। জনসাধারণের চলাচলসহ বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও দিনমজুরদের মারাত্মক অসুবিধা হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, জনবসতি এলাকায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন কারখানার পানি ছেড়ে দেয় জোয়ার ও বৃষ্টির পানির সঙ্গে। অপরিকল্পিত শিল্প কারখানা স্থাপনার কারণে পানি চলাচলের ড্রেন বন্ধ হয়ে গেছে অনেক স্থানে। অনেকেই ভরাট করে দখল করে রেখেছে ড্রেনও। যার কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় ইউনিয়র পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, জোয়ারের পানির সঙ্গে কারখানার পানি ঢুকলে সেগুলো আর বের হতে পারে না। পানি চলাচলের জন্য ড্রেন গুলোও ভরাট হয়ে গেছে; ডুবে গেছে সড়ক, স্কুল, মাদরাসা; ভোগান্তিতে সাধারণ জনগণ। বর্তমানে কোনোভাবে চলাচল করতে পারছে না পানি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত পীযুষ কুমার চৌধুরী বলেন, জোয়ারের পানি ও বিভিন্ন কারখানার পানিতে কারণে শিকলবাহা ইউনিয়নের বাসিন্দাদের বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পানিতে বিভিন্ন সড়কও নষ্ট হয়ে পড়ছে। খুব শিগগিরই এটি সমাধান করা হবে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।