প্রতিবন্ধী যুবকরা শেখার ও কর্মসংস্থানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত

সাইটসেভার্স ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় প্রকাশ

বাংলাদেশের তরুণ প্রতিবন্ধীদের চ্যালেঞ্জ, আশা এবং আকাঙ্ক্ষার অনুসন্ধান নিয়ে একটি উদ্ভাবনী নতুন গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। “ব্রিটিশ একাডেমি ইয়ুথ ফিউচারস গবেষণা” প্রকল্পটি বাংলাদেশের শহুরে এবং গ্রামীণ পরিবেশে বসবাসকারী প্রতিবন্ধী তরুণদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। গবেষণার নেতৃত্বে ছিল তরুণ সমকক্ষ (পিয়ার) গবেষকদের একটি দল যাদের কোন না কোন প্রতিবন্ধীতা রয়েছে এবং তাদেরকে প্রতিবন্ধী অন্তর্ভুক্তির জাতীয় নীতি গঠনে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা প্রদান করা হয়েছে|

সাইটসেভার্স এবং ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথ দ্বারা যৌথভাবে আয়োজিত গবেষণা ফলাফল প্রকাশের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, “গবেষণা সামাজিক উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং উন্নয়নের জন্য গবেষণার কোন বিকল্প নেই।” তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, এই গবেষণাটি জীবিকার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী যুবকদের আকাঙ্ক্ষা বুঝতে সাহায্য করবে এবং সেই আকাঙ্ক্ষাগুলো বাস্তবায়নে বাধাগুলো নির্ধারণ করবে।

সাইটসেভার্স বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর অমৃতা রেজিনা রোজারিও বলেন: “আমরা এই নতুন গবেষণাটি করতে পেরে আনন্দিত যেটি বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী তরুণদের জীবিকা নির্বাহের অভিজ্ঞতা, আকাঙ্ক্ষা এবং চ্যালেঞ্জগুলি বোঝা এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা, এসডিজি ৮-সন্মানজনক কাজ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতিবন্ধী তরুণদের নীতি সংলাপে (পলিসি ডায়লগ) অন্তর্ভুক্তিকরণ অনুসন্ধান করেছে।” তিনি আরো বলেন, “সাইটসেভার্স এই গবেষণার ফলাফল বিভিন্ন প্রেগ্রামে অন্তর্ভূক্ত করে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাবে।”

অনুষ্ঠানের সভাপতি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর অধ্যাপক ড. মালাবিকা সরকার বলেন, “এই গবেষণায় শুধু বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী তরুণদের অভিজ্ঞতা বোঝার ক্ষেত্রেই প্রকৃত পার্থক্য সৃষ্টি করবে নাই বরং তারাই এই গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছে কারণ তারাই তাদের অভিজ্ঞতাগুলো সবচেয়ে ভালো বোঝেন। প্রতিবন্ধী তরুণ গবেষকদের নিযুক্ত করে, আমরা একটি সত্যিকারের অন্তদৃষ্টি পেয়েছি এবং এটি তাদের জীবনকে প্রভাবিত করে এমন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে অবদান রাখতে সক্ষম করবে।

যদিও বাংলাদেশ আশাপ্রদ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবুও ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বৈষম্য, লিঙ্গ বৈষম্য, যুব বেকারত্ব এবং শ্রমবাজারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে এখনও চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।

এই গবেষণাটি কমিউনিটি-ভিত্তিক অংশগ্রহণমূলক গবেষণা (CBPR) ভিত্তিতে করা হয়েছে। প্রকল্পটি সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর এবং নরসিংদী জেলার প্রতিবন্ধী তরুণদের সহ-গবেষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে এবং তারা গবেষণার জন্য তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণের জন্য স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক গবেষকদের সাথে কাজ করেছে।

অনুষ্ঠানে নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিসএবিলিটি প্রোটেকশন ট্রাস্টি বোর্ড-এর চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রব্বানী উপস্থিত ছিলেন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর ড. মৃত্তিকা বড়ুয়া এবং সায়েমা আক্তার যৌথভাবে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
এছাড়াও ড. সাপানা বাসতে, সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট, সাইটসেভার্স গ্লোবাল, খন্দকার জহুরুল আলম, নির্বাহী পরিচালক, সেন্টার ফর সার্ভিসেস এন্ড ইনফরমেশন অন ডিজএ্যাবিলিটি, জহিন বিন সিদ্দিক, কান্ট্রি ডিরেক্টর, লিওনার্ড চেশিয়ার বাংলাদেশ প্রমূখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।